ফের পোস্টার-দৌরাত্ম্য বজরং দলের। সরস্বতী পুজো শেষ। কিন্তু বাঁকুড়া শহরে এখনও বজরং দলের চোখরাঙানি শেষ হয়নি। বিষ্ণুপুরের কলেজ মোড়ে এখনও জ্বলজ্বল করছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের শাসানি ভরা ‘সতর্কীকরণ’ পোস্টার। খোলা জায়গায় কোন যুগলকে দেখলেই ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তারা। রাস্তায় তেমন কিছু দেখলেই যুগলের বাবা মায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বজরংরা। বাড়াবাড়ি করলেই বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে, হুঁশিয়ারি তাদের। এমনকী রাজ্যে বিজেপি সরকার তৈরি হলে ‘লাভ জিহাদ ও ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে আইন আনা’র কথাও ঘোষণা করেছে। বুধবার সকাল থেকে বাঁকুড়া শহর জুড়ে এমন পোস্টারে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বর্তমান প্রজন্ম।
প্রসঙ্গত, আজ বাঁকুড়ায় বজরং দলের এমন পোস্টার দেখা গেলেও গতকাল সরস্বতী পুজোর দিন বজরং দলের এমন পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছিল গোটা বর্ধমান। তবে বজরংদের এই ফতোয়ায় তীব্র বিরোধীতায় সরব বাংলার তরুণরা। তাদের কথায়, ভালোবাসার দেশ আমাদের এই ভারতবর্ষ। এখানে এই ধরণের ফতোয়া জারির কোন মানে হয়না। এই ঘটনাকে বজরং দলের ‘নোংরামি ছাড়া আর কিছুই নয়’ বলে দাবি করেছেন তারা।
বিষ্ণুপুরের তরণদের কথায়, একজন ছেলে ও একজন মেয়ে ভালো বন্ধু হতেই পারে। তাঁরা একসঙ্গে কোন জায়গায় বসে গল্প করতেই পারে। এতে নোংরামি বা অপরাধের কিছু নেই। আর আইনত প্রেমের ওপর আইনত কোনও নিষেদ্ধাজ্ঞা নেই। ফলে এমন ঘটনা রীতিমত নিন্দনীয়। তাদের দাবি, এটা বাংলা। মুম্বই বা দিল্লী নয়। সেখানে এত দিন দাপট চালিয়ে বাংলায় এখন এমন পোস্টার ফেলে অভব্যতা করছে বজরংরা। আর একজনের কথায়, রাস্তায় বেরোলে যেভাবে একশ্রেণীর ছেলে মেয়েদের বিরক্ত করে, সেসব আগে বন্ধ করুক বজরংরা। মহিলাদের নিরাপত্তা দিক, তাহলেই সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে। প্রেম ব্যক্তিগত একটি ব্যাপার, সেটা নিয়ে এতো মাথা ঘামানোর দরকার নেই। এ বিষয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি তীর্থঙ্কর কুণ্ডু বলেন, এই সংস্কৃতি বাংলায় ছিলনা। উত্তর প্রদেশ-বিহারেই এসব দেখা গেছে। একটা দল কিম্বা সংগঠন মানুষের জীবন-যাপনের ধারা ঠিক করবে এটা মেনে নেওয়া অসম্ভব।