এতদিন ধরে নিউ নর্ম্যালে স্কুল-কলেজ খোলার দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিকবার আন্দোলনে পথে নেমেছিল সিপিআইএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। আর আজ যেখানে স্কুল খুলতে চলেছে, সেদিনই সিপিআইএম ধর্মঘট ডাকায় ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি ছাত্র ধর্মঘটও ডেকেছে এসএফআই। অন্যদিকে, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আজ থেকেই স্কুল খোলার ব্যাপারে অনড়। তবে, অভিভাবকদের একটা বড় অংশই ঝুঁকি নিয়ে ধর্মঘটের মধ্যে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে নারাজ।
বামেদের নবান্ন অভিযানে পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে ডাকা এই ধর্মঘটে পড়ুয়ারা কেন ক্ষতিগ্রস্ত হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা স্কুল বন্ধ রাখার উদ্দেশ্যে রাজপথে নামিনি। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসন যে আক্রমণ নামিয়ে এনেছে, তাতে জখম হয়েছে বহু স্কুলপড়ুয়াও। তারই প্রতিবাদে ধর্মঘট। আমরা অনুরোধ করছি, একদিন পিছিয়ে খোলা হোক স্কুল। তবে, শিক্ষামন্ত্রী যখন অনড়, আমরাও তেমনই ধর্মঘট ডেকেছি।”
এরপরই সৃজন বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক পরে সেপ্টেম্বর থেকেই স্কুল চালু করা যেত। সেটা কেন করা হয়নি? উল্টে ট্যাব দিয়ে অনলাইন শিক্ষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল সরকার। এতদিন বন্ধ রইল, আর একদিন পরে স্কুল খুললে কী এমন ক্ষতি হবে? এর জন্য সবার এত গাত্রদাহ কেন বুঝতে পারছি না!” তাহলে যে পড়ুয়া আজ প্রথম দিনেই স্কুলে আসতে চাইবে, তাকে কি বাধা দেওয়া হবে? সেই প্রশ্নের জবাবে সৃজন বলেন, আমরা অভিভাবকদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তাঁরা যেন সন্তানদের স্কুলে না পাঠান। যে ছাত্ররা একান্তই স্কুলের উদ্দেশ্যে রাস্তায় বেরিয়ে পড়বে, তারা যেন আমাদের পিকেটিংয়ে যোগ দেয়।
এদিকে, আজ বেহালায় এক সাংবাদিক বৈঠকে ধর্মঘটের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এতদিন ধরে সবাই উদ্বিগ্ন ছিলেন, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কী হবে, উচ্চ মাধ্যমিকের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস কীভাবে হবে? আর যখন স্কুল খোলা সম্ভব হচ্ছে, তখন ধর্মঘট ডাকা হচ্ছে। রাজ্যের তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, বামেরা এক্ষেত্রে আরও বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পারত। এতদিন ধরে সবাই অপেক্ষায় ছিল আজকের দিনটার জন্য। আর সেটা যখন হচ্ছে, সেদিনই ধর্মঘট ডাকার অর্থ, তারা শিক্ষার সর্বনাশ চায়। হাতে ইস্যু না থাকায় ধর্মঘটকে হাতিয়ার করে নজরে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।