কিছুদিন আগেই আমজনতার চোখের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে ‘চোখের আলো’ প্রকল্পের ঘোষণা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছর রাজ্যজুড়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ২০ লক্ষ বৃদ্ধ-বৃদ্ধার ছানি অপারেশন করবে রাজ্য সরকার। তাঁদের মধ্যে আট লক্ষের বেশি মানুষকে বিনামূল্যে চশমা দেওয়া হবে। প্রকল্পের সুবিধা পাবে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার মাত্র সতেরো দিনের মধ্যেই আড়াই লাখেরও বেশি মানুষের ঘরে গিয়ে চক্ষুরোগের চিকিৎসা করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর দেখিয়ে দিল, ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়।
দফতরের তথ্যানুযায়ী, প্রকল্পটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর, গত সতেরো দিনে রাজ্যের কোণে কোণে মোট ২ লক্ষ ৫৹ হাজার ৭৩১ ‘চোখের আলো’র আওতায় চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন। এবং সে জন্য তাঁদের হাসপাতালে গিয়ে হত্যে দিতে হয়নি। বাড়ির দোরগোড়ায় অত্যাধুনিক সাজসরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। উল্লেখ্য, প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের বড় অংশই রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার। ৫২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ৮৫টি পুর-এলাকায় আড়াই লক্ষাধিক মানুষের চোখে নতুন আশার আলো জাগিয়েছে এই প্রকল্প।
এহেন ঈর্ষণীয় সাফল্যের খতিয়ানে চোখ রেখে চমকে উঠেছেন দফতরের শীর্ষ কর্তারাও। ৪ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে ‘চোখের আলো’ প্রকল্প ঘোষণা করেন। উদ্দেশ্য একটাই, রাজ্যের সব নাগরিক যাতে চক্ষু চিকিৎসার সুযোগ পান। পরদিনই রাজ্যজুড়ে শিবির শুরু হয়। আগামী তিন মাস ধারাবাহিক শিবির চলবে। চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং পুর এলাকায় চক্ষু পরীক্ষার শিবিরে হাজির হচ্ছেন। ছানি কাটা, চশমা দেওয়ার পাশাপাশি চোখের বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত সুরাহা হচ্ছে সেখানে।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানিয়েছেন, ধারাবাহিক ভাবে এই কর্মসূচী চলবে। কর্তাদের বক্তব্য, চোখের আলো প্রকল্পে রাজ্যে শীর্ষে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। ওই জেলায় প্রায় ২৫ হাজার নাগরিক পরিষেবা পেয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে হুগলি, পরিষেবা পেয়েছে ১৬ হাজার নাগরিক। তিন নম্বরে নদিয়া জেলা। ‘চোখের আলো’র চোখ ধাঁধানো সাফল্য দেখে রাজ্যের সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং জেলা হাসপাতালকে এই কর্মসূচী শুরু করতে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। প্রকল্পে অংশ নেওয়া সব চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের এককালীন সাম্মানিক দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।