তাঁর ‘মৃত্যু রহস্য’ উদঘাটনে কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে দ্বিচারিতা করছে বিজেপি। এবার এমনই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাঁর পরিবারের সদস্যরা। শুধু প্রতিবাদই নয়, শ্যামাপ্রসাদের নিজের হাতে স্থাপিত ‘জনসঙ্ঘ’কে নতুন করে গড়ছে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আজ, শুক্রবার কলকাতা প্রেসক্লাবে শ্যামাপ্রসাদের নীতি-আদর্শকে সামনে রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করবে নতুন রাজনৈতিক দল ‘ভারতীয় জনসঙ্ঘ পার্টি’। গত ৮ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি পেয়েছে বিজেএসপি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের সিংহভাগ বিধানসভা আসনে লড়ার প্রস্তুতি নিয়েই তাঁরা মাঠে নামছেন বলে জানিয়েছেন বিজেএসপি-র রাজ্য সভাপতি সুব্রত মুখোপাধ্যায়। যিনি শ্যামাপ্রসাদের বংশধর।
‘জ্বলন্ত প্রদীপ’— প্রতীক চিহ্ন হিসেবে চেয়ে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে আর্জি জানিয়েছে বিজেএসপি। চলতি মাসের মধ্যেই প্রতীক চিহ্ন সংক্রান্ত বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে নতুন জনসঙ্ঘের তরফে দাবি করা হয়েছে। সুব্রত জানিয়েছেন, ১৯৭৭ সালে জনসঙ্ঘ মিশে যায় জনতা পার্টির সঙ্গে। অবলুপ্তি ঘটে জনসঙ্ঘের। সেই জনসঙ্ঘেরই ‘গর্ভজাত’ বিজেপি। শ্যামাপ্রসাদের নীতি-আদর্শকে সামনে রেখেই পথচলা, এগিয়ে চলা বলে প্রতিনিয়ত বিজেপির তরফে দাবি করা হচ্ছে। অথচ সেই শ্যামাপ্রসাদের ‘মৃত্যু রহস্য’ উদঘাটনে গেরুয়া শিবিরের কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই বিজেপির। প্রথম এনডিএ সরকার গঠিত হওয়ার অনেক আগে থেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু রহস্য উন্মোচন করার দাবি জানালেও বাজপেয়ীর শাসনকালে তো বটেই, মোদীর নেতৃত্বাধীন বর্তমান এনডিএ সরকারের আমলেও, সেই মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের জন্য কখনও সরব হয়নি বিজেপি।
যদিও ২০০৪ সালে কংগ্রেস জমানায় বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছিল, শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের রহস্য মৃত্যুর পিছনে রয়েছে ‘নেহরুর ষড়যন্ত্র’। কিন্তু দলীয়স্তরে এই বলাটুকুই সার! এর বাইরে বর্তমান বিজেপির পূর্বপুরুষ শ্যামাপ্রসাদকে নিয়ে আর কোনও উচ্চবাচ্য নেই গেরুয়া শিবিরের তরফে। শ্যামপ্রসাদকে নিয়ে বিজেপির এই আশ্চর্যরকমের ‘নীরবতা’কেই দ্বিচারিতা বলে অ্যাখ্যায়িত করছে বিজেএসপি। সুব্রতর কথায়, বিজেপি প্রথম থেকেই বলে আসছে শেখ আবদুল্লার সঙ্গে হাত মিলিয়ে নেহরু সরকারের রচিত ষড়যন্ত্রেই মৃত্যু হয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের। ১৯৫১ সালের ২২ জুন যখন শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যু হয়, তখন নেহরু মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে ছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। শ্যামাপ্রসাদকে নিয়ে রচিত ষড়যন্ত্রের বিষয়ে বল্লভভাই জানতেন না, এমনটা হয় কী করে! আর হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে মোদী সেই বল্লভভাই প্যাটেলেরই মূর্তি স্থাপন করল কেন? এই প্রশ্ন তুলেছে বিজেএসপি।