ইতিমধ্যেই সারা বাংলাজুড়ে শুরু হয়েছে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তদারকিতে কাজ চলছে জোরকদমে। প্রথমদিকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নাম না থাকা বেসরকারি হাসপাতালগুলিও ধীরে ধীরে নিজেদের নাম তালিকায় ঢোকাচ্ছে। এবার ৩৫০ টি বেসরকারি হাসপাতাল যুক্ত হল এই প্রকল্পে। ফলে দেশজুড়ে সাড়াজাগানো এই স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের আওতায় এখন ১ হাজার ৩৫৫টি বেসরকারি ও ৫০২ সরকারি হাসপাতাল। সবমিলিয়ে ১ হাজার ৮৫৭টি হাসপাতাল। এর মধ্যে রয়েছে এইমস, ভেলোর সহ ভিন রাজ্যের হাসপাতালও।
উল্লেখ্য, ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প ঘোষণার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষের হাতে কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও প্যাকেজ রেট নিয়ে অখুশি ছিল বেশ কিছু হাসপাতাল। গত দেড় মাসে তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম সহ শীর্ষ আমলারা। বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির বক্তব্য তাঁরা শুনছেন। হাসপাতালগুলিকেও বলেছেন সরকারের কাছে প্রস্তাব জমা দিতে। এরই মধ্যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা ব্যক্তিকে কোনও হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা না করে ফিরিয়ে দিলে, তার লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। এই হুঁশিয়ারির ফলও মিলছে হাতেনাতে। কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা তো বটেই, কার্যত গোটা রাজ্য থেকেই স্বাস্থ্যসাথীতে নাম অন্তর্ভুক্ত করার জোয়ার দেখা গেছে বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে।
প্রসঙ্গত, এর মধ্যেই মিলেছে আরও একটি সুখবর। ১৮ই জানুয়ারি পযর্ন্ত এই কার্ডের সুবিধা নিয়ে ভেলোরে ৩৪২ জন ভর্তি হয়েছেন। ৩ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পেয়েছেন মানুষ। যখন রাজ্যের সাড়ে সাত কোটি মানুষ এই কার্ডে চিকিৎসা পেতেন, তখন প্রতিদিন গড়ে দু’হাজার জন চিকিৎসা নিতেন। এখন সেই সংখ্যাটি বেড়ে হয়েছে তিন হাজার। স্বভাবতই খুশি ও স্বস্তির আমেজ জনগণের মধ্যে। দপ্তর সূত্র অনুযায়ী, এই প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়া ৩৫০টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে কলকাতার ২৩টি হাসপাতাল রয়েছে। তালিকায় রয়েছে, বেলভিউ, মেডিভিউ, নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতালের মতো মাঝারি ও বড় হাসপাতাল ও নার্সিংহোমও। এছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার ১৪টি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৫টি হাসপাতাল এই কার্ডে পরিষেবা দিতে আবেদন করেছে। খতিয়ে দেখে আবেদনগুলি মঞ্জুরও করেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার উমা ও লেকটাউন নার্সিংহোম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার এইচএসজি ও রেমিডির মতো সুপরিচিত হাসপাতাল।