দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় সুরক্ষা প্রসঙ্গে ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। অরুণাচল সীমান্তের বিতর্কিত জমিতে চীনা আগ্রাসন অব্যাহত এখনও। উপগ্রহচিত্র অনুযায়ী অরুণাচলের সীমান্ত এলাকায় তিসারি চু নদীর ধারে সুবানগিরি জেলায় একটি আস্ত গ্রাম বানিয়ে ফেলেছে চীন। যা নিয়েই এবার রাহুলের নিশানায় মোদী। মঙ্গলবার টুইটারে একটি সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে মোদীকে বিঁধে রাহুল গান্ধী লেখেন, ‘ওনার প্রতিশ্রুতি স্মরণ করুন- দেশের মাথা নত হতে দেব না।’ একসঙ্গে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে টুইটে লিখেছেন, ‘মোদীজি ৫৬ ইঞ্চির বুক কোথায় গেল?’
প্রসঙ্গত, মার্কিন সংস্থা প্ল্যানেট ল্যাবসের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, অরুণাচল প্রদেশে ভারতের সীমান্তের সাড়ে চার কিলোমিটারের ভিতর চীন একটি নতুন গ্রাম তৈরি করেছে। সেখানে রয়েছে ১০১টি বাড়ি। গ্রামটি আপার সুবানগিরি জেলায় স্থিত সারি চু নদীর তীরে অবস্থিত। এটি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার লাগোয়া। এই অঞ্চল থেকেই পাঁচ ভারতীয়কে গত সেপ্টেম্বরে চীনা সেনা আটক করেছিল। বিগত ১৫ মাসে এই গ্রামটি নির্মাণ করা হয়েছে। কারণ ২০১৯ সালের অগস্ট মাসেও ওই স্থানে কোনও গ্রাম ছিল না। তথ্যটি প্রকাশ্যে আসার পর সতর্ক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ভারত। বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত ঘটনার ওপর যেন কড়া নজর রাখা হয়। দেশের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক।
গতকালই অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এই ইস্যুতে জবাব দাবি করেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম। বিজেপি সাংসদ তাপির গাও-এর দাবি তুলে ধরে জবাব দাবি করেন চিদাম্বরম। তাপি অভিযোগ করেছিলেন যে, চিন অরুণাচলের মধ্যে প্রবেশ করে প্রায় ১০০ বাড়ি ও রাস্তা তৈরি করেছে। চিদাম্বরমের দাবি, বিজেপি সাংসদের দাবি যে সত্য তা উপগ্রহ চিত্রে মাধ্যমেই স্পষ্ট। কিন্তু ভারত সরকার কোনও পদক্ষেপ না করেই ফের একবার চিনকে প্লিন-শিট দিচ্ছে এবং পূর্বতন সরকারকে দোষী সাব্যস্ত করছে।
উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালের জুন মাসে গালওয়ান সংঘর্ষের পর বিগত আট মাস ধরে লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা ও চাঞ্চল্য অব্যাহত। একাধিকবার সেনা ও কূটনীতিক বৈঠকের পরও বিরোধের সুরাহা হয়নি। এর মাঝেই উপগ্রহচিত্রে প্রকাশিত অরুণাচলে চীনের গ্রাম তৈরির খবর দেশের সার্বভৌমত্ব ও সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। স্বভাবতই চাপে বিদেশমন্ত্রক।