সেই ১৯৮৮ সাল। তারপর থেকে দীর্ঘ ৩৩ বছর ব্রিসবেনে কোনও টেস্ট হারেনি অস্ট্রেলিয়া। এমনকি ভারতও এর আগে কোনোদিন গাব্বায় টেস্ট জেতেনি। তবে আজ য়েজ দু’টি ছবিই বদলে দিল অজিঙ্ক রাহানের নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া। গাব্বায় অজি দম্ভকে চূর্ণ করে গাভাস্কার-বর্ডার টেস্ট সিরিজ জিতল ভারত। শেষ হল ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার ৩৩ বছরের সাফল্যের অধ্যায়। টিম পেইনের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে এই মাঠে নতুন করে ইতিহাস লিখল ভারত।
মাত্র ৩ ওভার বাকি থাকতেই এদিন দুপুরে গাব্বা টেস্ট ৩ উইকেটে জিতে নেন রাহানেরা। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ৩৬৯ রানের জবাবে ভারত অল-আউট হয়ে যায় ৩৩৬ রানে। এরপর ৩৩ রানে এগিয়ে থেকে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে তোলে ২৯৪ রান। প্রথম ইনিংসের লিড মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে থাকে সর্বমোট ৩২৭ রানে। ব্যাট করতে নেমে ভারত ম্যাচ শেষ হওয়ার মাত্র ৩ ওভার বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের বিনিময়ে ৩২৯ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায়।
চতুর্থ টেস্টে চোটে জর্জরিত ভারতীয় দল প্রথম একাদশ নামাতেই বিপদে পড়েছিল। সেখান থেকে শেষ দিনে ৩২৮ রান তাড়া করে জয় ছিল শুধুই স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন তরুণ ওপেনার শুভমন গিল। চেতেশ্বর পূজারা যখন সব চেয়ে বেশি বল খেলে ৫০ করছেন, শুভমন তখন টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরির পথে। তবে সেই সেঞ্চুরি না এলেও জয়ের দিশা ততক্ষণে দেখতে পেয়ে গিয়েছে ভারত। রাহানের ২৪ বলে ২২ রানের মারকাটারি ইনিংস যেন বুঝিয়ে দিল ড্র নয় জিতেই ফিরতে চান তিনি।
তবে পূজারা, রাহানেরা শুরু করলেও শেষ করতে পারেননি। কাপ আর ঠোঁটের মধ্যে তফাৎ রয়ে গিয়েছিল তখনও। আর সেই দূরত্ব মোছার কাজটাই করলেন তরুণ ঋষভ পন্থ। ৮৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ভারতের জয় নিশ্চিত করেই ফিরলেন তিনি। এই জয়ের পর ভারতের প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়া পন্থকে আর ভাবতে নাও হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ বিশ্বের অন্যতম সেরা। সেই আক্রমণকে ভোঁতা করলেন পন্থ, ওয়াশিংটনের মত তরুণ অনভিজ্ঞ ভারতীয়রা। যার পর এক নতুন ভারতের জন্ম হল ব্রিসবেনের মাঠে। যারা বিপক্ষের চোখে চোখ রেখে শেষ বল অবধি লড়তে জানে।