এবার আইএসএলে রেফারিং মানেই রীতিমতো বিভীষিকা! রেফারিদের নিয়ে সমালোচনায় সরব ভারতীয় ফুটবলমহল। মঙ্গলবার এটিকে মোহন বাগান বনাম মুম্বই সিটি এফসি’র মধ্যে ম্যাচে নিন্দনীয় ঘটনা ঘটিয়েছেন সবুজ-মেরুনের তিন ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিংগান, তিরি ও শুভাশিস বসু। অথচ শুভাশিস ও তিরির অবধারিত লাল কার্ড প্রাপ্য ছিল। খেলার শেষলগ্নে মুম্বইয়ের গোদার্দের কাফ মাসলের উপর সটান দাঁড়িয়ে পড়েন শুভাশিস। প্রতিবাদ জানাতে আসলে বীরপ্রতাপ সিংকে পাল্টা ধাক্কা মারেন বাগানের এই লেফট-ব্যাক। মুম্বইয়ের তরুণ ফুটবলারটি মাটিতে পড়ে গেলে, তখন জার্সির কলার ধরে তাঁকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন তিরি। তারপরে বীরপ্রতাপের কানের পাশে বুট দিয়ে টোকা দেন সন্দেশ। পেশাদার ফুটবলে এমন অমানবিক কাজ কখনওই প্রত্যাশিত নয়। রেফারির পকেটে কী তখন লাল কার্ড ছিল না? নাকি বিশেষ কারণে তিনি পকেট থেকে সেই রক্তবর্ণের কার্ড বের করেননি? প্রশ্নের উত্তর অজানা।
বলের কাছাকাছি থাকা ভালো রেফারির অন্যতম গুণ। অধিকাংশ ম্যাচেই রেফারিরা তা মানছেন না। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে রয় কৃষ্ণা অফ-সাইড থেকে গোল করেছিলেন বলে শোরগোল উঠেছিল ফুটবলমহলে। হায়দরাবাদ ম্যাচে মনবীর সিং এগিয়ে দিয়েছিলেন এটিকে মোহন বাগানকে। পরে বক্সে তিনিই ফাউল করায় পেনাল্টি পায় হায়দরাবাদ। রেফারি পেনাল্টি দিলেও তিনি মনবীরকে হলুদ কার্ড দেখাননি। এবারের আইএসএলে প্রায় প্রতি ম্যাচেই ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন রেফারিরা। অনেকেরই মনে হচ্ছে, খেতাবি দৌড়ে তারাই বড় ভূমিকা নেবেন। এদিকে, দেশের এক নম্বর লিগে রেফারিংয়ের মান প্রত্যাশিত মানে পৌঁছচ্ছে না বলে স্বীকার করে নিয়েছেন এআইএফএফ সচিব কুশল দাস। তিনি জানান, ‘আমরা এই ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। রেফারির মান উন্নয়নের জন্য আমরা একটি বিদেশি সংস্থাকে নিয়োগ করেছি। কিন্তু এর সুফল পেতে কয়েক বছর সময় লাগবে।’
বুধবার এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে লাল কার্ড দেখেছিলেন এসসি ইস্ট বেঙ্গলের ডিফেন্ডার ড্যানি ফক্স। তাই ৯ জানুয়ারি বেঙ্গালুরু ম্যাচে তাঁর খেলার কথা ছিল না। যদিও টিভি রিপ্লেতে দেখে লাল-হলুদ কর্তৃপক্ষ ড্যানি ফক্সের সাসপেনশন তুলে নিতে ফেডারেশনের কাছে আবেদন জানায়। শেষ পর্যন্ত রেফারির ভুল স্বীকার করে নেয় ফেডারেশন। ম্যাচের দিন ড্যানি ফক্স খেলার অনুমতি পান। সেই ম্যাচের রেফারি এ রোয়ানের মনে হয়েছিল, ফক্স অবৈধভাবে রোমারিওকে ট্যাকল করেছিলেন। কিন্তু টিভি রিপ্লে’তে স্পষ্ট দেখা যায়, লাল-হলুদ ডিফেন্ডারটি কোনও ভুল করেননি। স্বাভাবিকভাবেই রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচণ্ড সমালোচনাও হয়েছিল। এই ব্যাপারে বাংলার প্রাক্তন রেফারিরা বললেন, এবারের আইএসএলের খেলাগুলি দেখে মন ভরছে না। আর রেফারিং দেখে আঁতকে উঠতে হচ্ছে। বাড়ি থেকে বের হলেই এই খারাপ রেফারিং নিয়ে কথা শুনতে হচ্ছে। হয়তো জৈব বলয়ের মধ্যে থাকতে হচ্ছে বলে রেফারিদের ছন্দে দেখা যাচ্ছে না।