দিন যত গড়াচ্ছে নয়া কৃষি আইন ইস্যুতে ক্রমেই কোণঠাসা হচ্ছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের উপর আরও চাপ বাড়িয়ে তিনটি নয়া কৃষি আইনে আপতভাবে স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে কৃষি আইন নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধীদেরও অভিযোগ, পর্যাপ্ত আলোচনা ছাড়াই পাশ করানো হয়েছে এই আইন। যদিও বিরোধীদের এই দাবি বহুবার উড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। এমতাবস্থায় একটি আরটিআই-র জবাব দিতে গিয়ে রীতিমতো বিপাকে পড়তে দেখা গেল মোদী সরকারকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সরকারের পাল্টা দাবি ছিল, যথেষ্ট আলোচনা করেই এই আইন পাশ হয়েছে। এমনকী কিছুদিন আগেই একটি ফেসবুক লাইভে বিল পাশের আগে নয়া কৃষি আইন নিয়ে আগাম আলোচনা, কমিটি গঠন, বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের কথা বলতে দেখা যায় কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরকে। এমনকী গত মাসেই একই দাবি করতে দেখা যায় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকেও। ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ওয়েবিনারে ৯২ লক্ষেরও বেশি কৃষক তাদের মতামত জানিয়েছিলেন বলেও তিনি জানান কিন্তু বর্তমান আরটিআই বলে কেন্দ্রের সেই মিথ্যা দাবির মুখোশ খসে পড়ল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সূত্রের খবর, সেই সব আলোচনার সত্যতা প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে সম্প্রতি আরটিআই কর্মী অঞ্জলি ভরদ্বাজ কেন্দ্রের কাছে আরটিআই করেন। কপি পাঠানো হয় কৃষি মন্ত্রকের কাছেও।
তাতেই কৃষক-সহ বিশেষজ্ঞদের সভাগুলির তারিখ এবং অংশগ্রহণকারীদের তালিকা, মিটিংয়ের সিদ্ধান্তের অনুলিপি, অংশগ্রহণকারী রাজ্য, বিশেষজ্ঞ এবং কৃষক দলের তালিকা চেয়েছিলেন। আর তার উত্তরেই কেন্দ্র জানাচ্ছে প্রাক আইন-সংক্রান্ত কোনও পরামর্শ, বা আলোচনার কোনও তথ্যই তাদের কাছে নেই। এই খবর সামনে আসতেই ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলগুলিকে।
কেন্দ্রের খামখেয়ালিপনা ও জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার মানসিকতার কারণেই আর গোটা দেশের কৃষক সমাজকে খেসারত দিতে হচ্ছে বলেও ক্ষোণ উগড়ে দিতে দেখা যায় একাধিক বিরোধী নেতাকে। এদিকে আরটিআই-র উত্তরে সঠিক কোনও তথ্য প্রমাণ পেশ করতে না পারায় মুখ পুড়ছে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকেরও। এমনকী প্রশ্নের মুখে কৃষিমন্ত্রীর ভূমিকাও। এমনকী কিছুদিন আগে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কৃষি আইন সংক্রান্ত আরটিআই মামলার জবাবেও কেন্দ্রের এই ‘স্ববিরোধিতা’ প্রকাশ্যে এসেছে বলে খবর।