কাটোয়ার জনসভা থেকে জগদানন্দপুর গ্রামের রাধাগোবিন্দ মন্দিরকে ‘চৈতন্যদেবের দীক্ষাস্থল’ বলেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। তাঁর এই মন্তব্যের প্রতিবাদে বঙ্গের রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাষ্টের ব্যানারে ছয়লাপ কাটোয়া। ওই ভুল মন্তব্যকে সমর্থন করায় বিজেপির রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছে ব্রাহ্মণ সংগঠন।
শনিবার কাটোয়ার জগদানন্দপুর গ্রামে রাধাগোবিন্দ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর মুস্থুলি গ্রামে জনসভা করেন জে পি নাড্ডা। ওই জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন, ‘আজ আমি রাধাগোবিন্দজির পুরনো মন্দিরে গিয়েছিলাম। যেখানে চৈতন্যদেব দীক্ষা নিয়েছিলেন। এরকম পূণ্যভূমি ও ভগবান রাধাগোবিন্দকে প্রণাম করে আজ আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি।’
কিন্তু চৈতন্যদেবের দীক্ষাস্থল রাধাগোবিন্দ মন্দির নয়, অর্থাৎ ভুল তথ্য দিয়েছেন নাড্ডা। কথিত আছে, প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছর আগে কাটোয়ার গৌরাঙ্গপাড়ায় কেশবভারতীর কাছে দীক্ষাগ্রহন করেছিলেন মহাপ্রভু চৈতন্যদেব। সন্ন্যাসগ্রহনের আগে কাটোয়ার ভাগীরথীর তীরে মহাপ্রভু মস্তকমু্ণ্ডন করেছিলেন। তাঁর দীক্ষাস্থল গৌরাঙ্গবাড়ি নামেই পরিচিত। বর্তমানে যা একটি সুপরিচিত পর্যটনস্থল। ব্রাহ্মণ সংগঠনের পাশাপাশি জেপি নাড্ডার তথ্যগত ভুলকে হাতিয়ার করে সমালোচনায় মুখর হয়েছে তৃণমূলও।
চৈতন্যদেবকে নিয়ে ভুল মন্তব্যের জেরে বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘বিজেপি তো নিজেদের হিন্দু ধর্মের ধারক ও বাহক বলে দাবি করে। তাঁরা এই ধরনের মন্তব্য করে হিন্দু ধর্মের অবমাননা করেছেন। ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
সোমবার থেকেই জে পি নাড্ডা ও দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে কাটোয়া শহরের স্টেশনরোড, পুরসভা মোড় থেকে গৌরাঙ্গবাড়ি চত্বর-সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার লাগানো হয় ব্রাহ্মণ সংগঠনের তরফে। এবিষয়ে রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাষ্টের কাটোয়া শাখার সম্পাদক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘মহাপ্রভু কাটোয়াবাসীর হৃদয়ের সঙ্গে গেঁথে রয়েছেন। সকলেই জানেন কোথায় মহাপ্রভুর দীক্ষাস্থল। তাই যাঁরা অপব্যাখ্যা করেছেন তাঁরা আপামর মানুষের বিশ্বাসে আঘাত হেনেছেন। তাঁদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’