বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে পুজোয় উপহার প্রদানই হোক, কিংবা বাম জমানার মন্ত্রীর চিকিৎসার বন্দোবস্ত, সবক্ষেত্রেই রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে সৌজন্যতার মাইলফলক গড়েছেন তিনি। এবার ফের নিজের সৌজন্যতার রাজনীতির পরিচয় দিয়ে নিহত বিজেপি নেতার স্ত্রীকে তিন সপ্তাহের মধ্যে চাকরিতে নিয়োগ করলেন তিনি। উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরে নিহত বিজেপি বুথ সভাপতি সৈকত ভাওয়ালের স্ত্রী চাকরি পেলেন দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বৃহস্পতিবার সৈকতের বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী নবপর্ণার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক।
প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের ১২ তারিখ হালিশহর এলাকায় দলীয় কর্মসূচীতে বেরিয়ে গণপিটুনিতে খুন হন বিজেপির বুথ সভাপতি সৈকত ভাওয়াল। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তদের ৩ জনকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এর তিন সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই সৈকত ভাওয়ালের বাড়ি গিয়ে তাঁর স্ত্রীকে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের মার্চে হালিশহরের সৈকতের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নবপর্ণার। বছর খানেকের দাম্পত্য ভেঙে গিয়েছে ডিসেম্বরের ১২ তারিখ। অসহায় স্ত্রীকে তাই দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে চাকরি দিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াল মমতা সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া এই চাকরি পেয়ে অনেকটাই স্বস্তিতে নবপর্ণা। মমতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এত কম সময়ের মধ্যে আমাদের পরিবারকে এভাবে সাহায্য করার জন্য আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।’ ঘনিষ্ঠ মহলে নবপর্ণা এ-ও জানিয়েছেন যে তাঁর স্বামী সৈকতের হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক নয় বলেই মনে করেন তিনি। বৃহস্পতিবার সৈকতের বাড়ি গিয়ে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা বলার পর নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক জানান, বিজেপির নিহত বুথ সভাপতির ভাই হালিশহর পুরসভায় চাকরির জন্য আবেদন জানিয়েছেন। সেই আবেদনও দ্রুত মঞ্জুর করার চেষ্টা চলছে।