দুটো বছর পেরিয়ে গেছে শেষ ছবি ‘জিরো’-র। নামের মত সিনেমার বক্স অফিসও প্রায় একই ছিল। এরপর থেকে বহুবার গুজব রটলেও, ভক্তদের প্রত্যাশা চরমে থাকলেও তাঁর নতুন কোনও ছবির খবর আসেনি। এমনকি শেষ কবে বক্স অফিসে তাঁর ছবি হিট করেছিল, সেটাও হয়তো মাথা চুলকে বলতে হবে। তাতে কী! এখনও তিনিই অবিসংবাদিত ভাবে বলিউডের বাদশা, কিং খান। ফ্যানরা বলেন, মানুষটা বড্ড ভাল কথা বলেন!
শুক্রবার গোধূলি বেলায় কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও একবার যেন হৃদয় ছুঁয়ে গেল তাঁর কথা। এদিন মঞ্চে ছিলেন না শাহরুখ। মুম্বই থেকেই ভার্চুয়ালি কথা বলেন। ব্ল্যাক স্লিম ফিট শার্টের উপর একটা ব্ল্যাক জ্যাকেট। গালে ট্রিম করা দাড়ি। বললেন, “সেই ২০১১ সাল থেকে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে যাচ্ছি। এ বারই যেতে পারলাম না। সত্যিই খারাপ লাগছে।”
এদিকে নবান্ন সভাঘরের নীল সাদা মঞ্চ, সামনের অতিথিরা সবাই তখন হাঁ করে তাকিয়ে রয়েছেন স্ক্রিনের দিকে। দেখে বোঝা যাচ্ছে- এটুকুতেই মুগ্ধতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। মঞ্চে বসে স্মিত মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দূরত্ব রাখতে আশপাশে কেউ নেই। তাই মুখে মাস্কও পরতে হয়নি দিদিকে। তাঁর হাসি, উজ্জ্বল মুখ দিব্য বোঝা যাচ্ছে। ওদিকে শাহরুখ বলে যাচ্ছেন- “চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য দিদি ফোন করেছিলেন। আমি বললাম, এই মহামারীর মধ্যে যাওয়া কি ঠিক হবে। আমার সঙ্গে এতগুলো লোক যাবে এবং এই প্রথম বার দিদি আমার কথা শুনেছেন। নইলে কোনওবার শুনতে চান না”।
প্রায় ২ হাজার মাইল দূরে বসে এটুকুতেই যেন গোটা নবান্ন সভাঘরকে নিজের বৈঠকখানা করে ফেলেছেন শাহরুখ। বললেন, গত বছর মহামারীতে আমরা সকলেই আক্রান্ত হয়েছি। খুব খারাপ বছর গিয়েছে। তবে একটা ব্যাপারে আমরা খুব ভাগ্যবান। আল্লাহ মিঞাঁ নে বহুত নওয়াজা। তা হল আমাদের পরিবার আমাদের পাশে থেকেছে। তাঁর কথায়, আমি অন্তত বুঝেছি, একমাত্র পরিবারই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিবার শুধু আমাদের বাবা, মা, বউ, ছেলেমেয়েকে নিয়ে নয়। আমরা সকলে মিলে একটা পরিবার। কলকাতা আমার পরিবার, বাংলা আমার পরিবার, গোটা দেশ আমার পরিবার। তাই একুশ সালে আমাদের সবাইকে আরও চেষ্টা করতে হবে পরিবারকে খুশি রাখার।
খুব কম সময়ে তাঁর কথা শেষ করেন শাহরুখ। তবে শেষ করার আগে আরও একবার বলেন, ‘মমতা দিদি আই মিস হাগিং ইউ’। প্রতিবার চলচ্চিত্র উৎসবে দিদির সঙ্গে শাহরুখের আলিঙ্গনের ছবিটাই এই বক্স অফিসে সুপারহিট থাকে। এ বার তা হয়নি ঠিকই। তবে শাহরুখ বলেন, পরের বার আরও কয়েকবার এক্সট্রা হাগ করে পুষিয়ে দেব দিদি।