অবশেষে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে ধরা পড়ল যোগী রাজ্যের বদায়ুঁ-গণধর্ষণ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূলপাণ্ডা মহন্ত সত্যনারায়ণ। ওই পাশবিক কাণ্ড ঘটিয়েই উধাও হয়ে গিয়েছিল ভণ্ড বাবাজি। বৃহস্পতিবার বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে গোপন আস্তানা থেকে ভণ্ড বাবাজিকে গ্রেফতার করেন এসটিএফের আধিকারিকরা। আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল গণধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত সত্যনারায়ণের দুই সহকারীকে।
গত রবিবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ জেলার উঘৈতি থানা এলাকার বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এক মহিলা স্থানীয় মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। রাত গড়িয়ে যাওয়া সত্বেও মন্দির থেকে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজখবর শুরু করেন। মাঝ রাতে মন্দিরের খানিকটা দূরে রাস্তার পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নির্যাতিতাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা সত্বেও চিকিৎসকরা বাঁচাতে পারেননি তাঁকে। রাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই নৃশংস ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডে দেশবাসীর সামনে ফের উস্কে যায় নির্ভয়ার স্মৃতি। কারণ গণধর্ষণের পরে ওই মহিলার যৌনাঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল রড। ভেঙে দেওয়া হয়েছিল তাঁর পাঁজর ও পা।
স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনা ফের ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। প্রশাসনের নিন্দে শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে নির্যাতিতার পরিবারও। তাঁদের দাবি, অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও উঘৈতি থানার স্টেশন অফিসার (এসএইচও) রবেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ ঘটনাস্থলে যাওয়ার তাগিদ দেখাননি। বরং যেখান থেকে ওই মহিলাকে উদ্ধার করা হয়, সোমবার দুপুরে কেবলমাত্র একবার সেখানে ঢুঁ মেরে আসে পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে মৃত্যু হলেও, সোমবার বিকেলে গণধর্ষিতার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসায় কার্যত স্তম্ভিত হয়ে যান সকলে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ‘মহিলার যৌনাঙ্গে মারাত্মক আঘাত লেগেছিল। ধর্ষণের পর তাঁর যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দিয়েছিল ধর্ষকরা। সেইসঙ্গে তাঁর ফুসফুসে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। যাতে ভেঙে যায় তাঁর পাঁজরের হাড়। নির্যাতিতার একটি পা-ও ভেঙে দেওয়া হয়। দেহ থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার ফলেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়।’ এমনই ভয়ঙ্কর ঘটনার তদন্তে নেমে মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। এরপর মন্দিরের মহন্ত বাবা সত্যনারায়ণ, তার সেবক বেদরাম ও ড্রাইভার যশপালের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। বেদরাম ও যশপাল আগেই ধরা পড়েছিল, এবার গ্রেফতার হল মহন্ত বাবা সত্যনারায়ণও।