পেশায় ক্ষেতমজুর। দৈনিক চাষ করে কতই বা আর আয়! সেই তিনিই হঠাৎ কঠিন হৃদরোগে আক্রান্ত। সুস্থ হতে ৫ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে বলেই জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারে চিকিৎসার এত খরচ আসবে কোথা থেকে, তা ভেবেই কুলকিনারা পাচ্ছিলেন না দুর্গাপুরের তপন দেব। আর তখনই দেবদূত হয়ে পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। বিডিও ও পঞ্চায়েত প্রধানের উদ্যোগে তড়িঘড়ি ওই প্রৌঢ়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হল স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড। কার্ড পেয়ে চোখে জল দুর্গাপুরের মানকরের বাম সমর্থক ওই ক্ষেতমজুরের।
জানা গিয়েছে, বুকে যন্ত্রণা নিয়ে গত ৫ জানুয়ারি তপনকে ভর্তি করা হয়েছিল মানকর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে তাঁকে রেফার করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। তবে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে না গিয়ে তাঁরা যান এক নার্সিংহোমে। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, তপন দেব হৃদরোগে আক্রান্ত। চিকিৎসার খরচ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। ক্ষেতমজুর তপনের কাছে এই বিশাল পরিমাণ টাকা স্বপ্ন মাত্র।
এই পরিস্থিতিতেই ৭ জানুয়ারি মানকর পঞ্চায়েতে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র আবেদন করেন তপনবাবুর স্ত্রী বিনীতা দেব। পরবর্তীতে পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে তপনবাবুর অসুস্থতার বিষয়টি শোনেন গলসি ১ ব্লকের যুগ্ম বিডিও মৃণ্ময় দাস। এরপরই তিনি পঞ্চায়েত প্রধানকে ফোন করে দ্রুত তপনবাবুর কার্ড তৈরির নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার রাতেই তপনবাবুর স্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড। কার্ড হাতে পেয়ে আপ্লুত ওই প্রৌঢ়।
তপনবাবু বলেন, “কোনদিনও মুখ্যমন্ত্রীর এই অবদান ভুলব না। আমার জীবন ও পরিবারকে তিনি বাঁচিয়ে তুললেন।” এই সাফল্যকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্য বলে উল্লেখ করে চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “গরিব মানুষদের কথা ভাবেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির সফলতা আজ রাজ্য জুড়ে। তার এই অবদানের কথা চিরদিন মনে রাখবে সবাই। এখানে কোনো দল দেখা হয় না। দেখা হয় মানুষ। যাঁরা এই রাজ্যেরই জনগণ।”