পাখির বাসা – রডন স্কোয়্যার। কলকাতার বুকে নবরূপে সজ্জিত জল ও সবুজ বৃক্ষরাজিতে ভরা পরিবেশবান্ধব রডন স্কোয়্যারই হতে চলেছে দেশ-বিদেশের পাখিদের নতুন ঠিকানা। নিউটাউনের ইকো পার্ককে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এই উদ্যোগ কলকাতা পুরসভার অভিজাত আবাসনের ফাঁকে তৈরি হয়েছে একটুকরো সবুজ অরণ্য। আমজনতার জন্য শনিবার দুপুরে নয়া উদ্যানটি খুলে দেবে কলকাতা পুরসভা। ফের পাখিদের কলতানে মুখর হয়ে উঠবে তিলোত্তমার পরিবেশ।
১৯৮৭ সালে দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত জনপদের মাঝে রডন স্কোয়্যারে বেসরকারি বহুতল আবাসন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার। সেখানকার সবুজে ঘেরা উদ্যান যাতে নষ্ট না হয়, সেই দাবিতে তুমুল আন্দোলন করেছিল প্রদেশ কংগ্রেস। সেসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিক্ষোভ দেখিয়ে দাবি করেছিলেন,“সবুজ ধ্বংস করে কিছুতেই বহুতল হতে দেওয়া যাবে না। পরিবেশবান্ধব পার্ক গড়তে হবে।” গণ-আন্দোলন এতই চরম আকার নেয় যে কার্যত পিছু হঠতে হয় তৎকালীন সরকারকে। সেসময় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। তাঁর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার প্রোমোটরদের মাধ্যমে বহুতল আবাসন ও কমিউনিটি হল তৈরির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। তারপর থেকেই রডন স্কোয়্যারের জলাশয় আগাছায় ভরে ছিল।
আসলে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৪৩ বছর আগের এক ইচ্ছাকে মর্যাদা দিতে কলকাতা পুরসভার এই উদ্যোগ। করোনা কালে লকডাউনের মধ্যেই এই কাজে কোমর বেঁধে নেমেছিলেন পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। গত ১২ সেপ্টেম্বর নিজে দাঁড়িয়ে থেকে জঞ্জাল সাফাই করে জলাভূমি সংরক্ষণের কাজ শুরু করান তিনি। এরপরই শুরু হয় নব আঙ্গিকে ‘কংক্রিটহীন’ ও পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দিয়ে পার্ক নির্মাণ। নতুন বছরের শুরুতে সেই কাজ শেষ হয়েছে। এবার দ্বার খুলে দেওয়ার পালা।