কিছুদিন আগেই খড়দার সভা থেকে সধ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, রামনবমী এলে তাঁর বাড়ির লোকেরাও পদ্মফুল ফোটাবে। আর তারপরই শুভেন্দুর ইঙ্গিত বুঝে কাঁথি পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে তাঁর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। আর তারপরেই গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়ে দেন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে তা নিয়েই শুভেন্দুকে কটাক্ষ করলেন যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডায়মণ্ড হারবারের সাংসদ এদিন বলেন, ‘রাজনীতি তো বুদ্ধিমত্তার লড়াই। আমি যেই বলেছি তোমার বাড়িতে তো একটাও পদ্ম ফোটাতে পারছ না, ওমনি একটা ভাইকে এনে জয়েন করিয়েছে। তার মানে তোমার বাড়িতে আরও অ্যাসিমটোমেটিক পেশেন্ট রয়েছে। তুমি নিজেই প্রমাণ করে দিচ্ছ!’
প্রসঙ্গত, চার দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন অভিষেক। আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ঘুরে এদিন তাঁর গন্তব্য ছিল দক্ষিণ দিনাজপুর। অভিষেক এদিন জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছোঁড়েন, ‘আচ্ছা আপনারা বলুন তো, টিভিতে টাকা কাকে টাকা নিতে দেখেছিলেন?’ স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলকর্মীদের মধ্যে থেকে জবাব আসে শুভেন্দু অধিকারী। একাধিকবার সেই প্রশ্ন করে যাচাই করে নেন অভিষেক। তাঁর বিরুদ্ধে ‘তোলাবাজি’ নিয়ে বারবার আক্রমণ শানানো বিজেপি নেতাদেরও এদিন চ্যালেঞ্জ করে অভিষেক বলেন, ‘আমি নাকি টাকা তুলি, তোলাবাজি করি। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আমার জন্য ইডি-সিবিআই লাগাতে হবে না। প্রমাণ করে আমার জন্য ফাঁসির মঞ্চ করবেন, আমি নিজেই মৃত্যুবরণ করব। আমরা ক্ষুদিরামের আদর্শ মেনে চলি। ক্ষমতা দখলের লালসা আমাদের নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার ক্ষমতা ছেড়ে চলে এসেছেন। তাঁর আদর্শেই তৈরি তৃণমূল, তাঁর আদর্শই আমরা মেনে চলি।’
শুধু তাই নয়। এদিন বহিরাগত ইস্যুতেও বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন ডায়মণ্ড হারবারের সাংসদ। গতকালই অভিষেককে বিঁধে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ ডক্টর সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও দক্ষিণ দিনাজপুরে বহিরাগত।’ এদিন এর জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানকার সাংসদ বলছেন, আমি নাকি বহিরাগত। বাংলায় জন্ম, বাংলায় বড় হয়েছি, ব্রাহ্মণের সন্তান, আমি বহিরাগত? বাহ বাহ! আর তোমার ইন্দোরের নেতা যারা বাংলা বুঝতে পারে না, বলতে পারে না, লিখতে পারে না, তারা কি দিনাজপুরের ভূমিপুত্র?’ এদিন সভায় ভিড় দেখে উৎফুল্ল অভিষেক বলেন, ‘দক্ষিণ দিনাজপুরে আজকের সভায় যে ভিড় হল, তা সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। যে কটা পদ্ম ২০১৯ সালে ফুটিয়েছিলেন, সেই সবকিছুই একুশের নির্বাচনে বানের জলে ভেসে যাবে। মে মাসের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন সম্পূর্ণ হয়ে ফলাফল ঘোষণা হয়ে যাবে। তার আগে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করুন। আগামী ৫ বছর উন্নয়নের জোয়ার থেকে বাংলার কোনও পরিবার বঞ্চিত হবে না। কিন্তু এই দাঙ্গাবাজ বিজেপিকে বিদায় করতেই হবে। মমতাকে তৃতীয়বারের জন্য নবান্নে পাঠাতেই হবে।’