নিজের আত্মজীবনীর চতুর্থ খণ্ড ‘দ্য প্রেসিডেনশিয়াল ইয়ারস: ২০১২-২০১৭’-এ মোদীর লাহৌর সফর নিয়ে এমনই বক্তব্য লিখেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, যে তা প্রকাশ্যে আসার পরই জন্ম দিয়েছে নয়া বিতর্কের। তাঁর মতে, সেই সময় ভারত-পাক সম্পর্ক যে জায়গায় ছিল, সেই সময় গায়ে পড়ে নওয়াজ শরিফের বাড়িতে যাওয়ার কোনও প্রয়োজনই ছিল না মোদীর।
উল্লেখ্য, ২০১৫-র ডিসেম্বরে আচমকা লাহৌরে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে হাজির হওয়া নিয়ে সেই সময়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন মোদী। সেই আগুনে ঘি ঢালে তার দিন কয়েক পর পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে পাকিস্তানি ফিদায়েঁ জঙ্গীদের হামলার ঘটনা। গোটা ঘটনায় মোদী সরকারের বিদেশনীতি নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
সেই প্রসঙ্গই উঠে এসেছে প্রণবের এই বইয়ে। তাঁর লেখায় রয়েছে, “লাহৌরে নওয়াজ শরিফের বাড়িতে যাওয়ার কোনও প্রয়োজনই ছিল না প্রধানমন্ত্রীর। সেই সময় দু’দেশের সম্পর্কের যা পরিস্থিতি ছিল, সেই পরিপ্রেক্ষিতে গায়ে পড়ে এই দৌত্য স্থাপন শুধুমাত্র অপ্রয়োজনীয়ই নয়, সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ছিল।”
কূটনৈতিক সম্পর্কের ঊর্ধ্বে গিয়ে অন্য রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে মোদীর যেচে বন্ধু স্থাপনের প্রচেষ্টারও সমালোচনা করেছেন প্রণব। জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ‘ভরসাযোগ্য বন্ধু’ বলে মোদীকে উল্লেখ করেছিলেন এক সময়। সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রণব লেখেন, “রাষ্ট্রনেতাদের ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের ঘোরবিরোধী আমি, কারণ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের পথে তা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ধরনের বন্ধুত্বের গুরুত্ব রয়েছে বলে মনে করি না আমি। কারণ এ ক্ষেত্রে কোনও সম্পর্কই ব্যক্তিগত হয় না।”