আইন অনুসারে রাজ্য সরকার যে কাউকে পুর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করতে পারে। কারণ পুরবোর্ড ভেঙে না দেওয়া পর্যন্ত সরকারের হাতেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকে। কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সৌমেন্দু অধিকারীর দায়ের করা মামলায় সোমবার এমন মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। গত ৩০ ডিসেম্বর আইন না মেনেই কাঁথির পুর প্রশাসকের পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু। কিন্তু এবার আইনি লড়াইয়ে ধাক্কা খেলেন সদ্য বিজেপিতে যোগদানকারী এই নেতা।
কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের পর পরই বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেখানে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়। যা নিয়ে গতকাল বিচারপতি অরিন্দম সিনহার সিঙ্গল বেঞ্চে সৌমেন্দুর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়ালে বলেন, আগের চেয়ারম্যানকে অপসারণের দু’দিনের মধ্যে কীভাবে গেজেট নোটিফিকেশন জারি হল? বোর্ড ভেঙে যাওয়ার পর কোন আইনে নির্বাচন ছাড়া চেয়ারম্যান পদে আরেক জনকে বসানো হল? জবাবে রাজ্যের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, পুর আইন অনুসারে রাজ্য সরকারের হাতে এই ক্ষমতা আছে। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে এমন একাধিক মামলারর রায়ও তুলে ধরেন তিনি।
এরপর বিকাশ উদ্দেশ্য বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, তাহলে কে ওই পদে বসতে পারেন? এক্ষেত্রে আইনের সংজ্ঞা কী? তাঁকে কি নির্বাচিত হতেই হবে? এ ক্ষেত্রে কি কোনও প্রশাসনিক কারণ আছে? তখনই বিচারপতি সিনহা জানিয়ে দেন, পুরবোর্ড ভেঙে না দেওয়া পর্যন্ত সরকারের হাতেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন মুখ্য বিষয় নয়। বোর্ড এমনি ভেঙে গেলেই নির্বাচন হবে। ততদিন রাজ্য যাঁকে বসাতে চায় তাঁকে বসাতে পারে। আপত্তি জানিয়ে বিকাশ বলেন, ‘নির্বাচিত ব্যক্তি ছাড়া ওই পদে কাউকে বসানো যায় না।’ কাঁথি পুরসভার আইনজীবী সপ্তাংশু বসু দাবি করেন, সৌমেন্দুও নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন না। তাই এই মামলার কোনও সারবত্তা নেই।