একাধিক নেতামন্ত্রীদের ভয় দেখিয়ে দলত্যাগ করিয়ে, কেন্দ্রের ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজনৈতিকভাবে এই রাজ্যের শাসকদলের উপরে চাপ সৃষ্টি করে, এবং সর্বোপরি ধর্মীয় মেরুকরণের মরিয়া চেষ্টা করছে বিজেপি। আপাত দৃষ্টিতে এমতাবস্থায় ক্ষমতায় ফেরা কঠিন মনে হলেও তৃণমূলের আত্মবিশ্বাসে একেবারেই চিড় ধরেনি। আর তার অন্যতম একটি কারণ হল শহর কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় দলের সংগঠন। তৃণমূল কংগ্রেসের বিশ্বাস, রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে যতই কঠিন লড়াই হোক, কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনায় এখনও তারাই একচ্ছত্র অধিপতি। এই এলাকাগুলিতে বিজেপি এখনও পোক্ত সংঠন গড়ে তুলতে পারেনি। সম্প্রতি দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষাতে সেই তথ্যই উঠে এসেছে।
বস্তুত, বাংলার নির্বাচনের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, শহর কলকাতার রাশ যখন যাদের হাতে থেকেছে, রাজ্যের শাসন ক্ষমতাও তারাই ভোগ করেছে। সেই কংগ্রেস আমল থেকেই এটা চিরন্তন সত্য। বাম আমলেও শহর কলকাতা তথা বৃহত্তর কলকাতা লালেই আস্থা রেখেছিল। দু’একটা ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনায় যারা বেশি আসন জিতেছে তারাই রাইটার্স বা নবান্ন দখল করেছে।
তৃণমূল নেতারা বলছেন, একুশেও তেমনটাই হতে চলেছে। শহর কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনাই তৃতীয়বারের জন্য বিধানসভা নির্বাচন জিততে সাহায্য করবে। ইন্টেলিজেন্স সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, তৃণমূলের অভ্যন্তরের সমীক্ষা বলছে, শহর কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনার বেশিরভাগ আসন তারাই জিততে চলেছেন। বিশেষ করে কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিজেপি দাঁতই ফোটাতে পারবে না। দলের সমীক্ষা বলছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ৩১টি আসনের ৩১টিতেই জয়ের মতো জায়গায় আছে শাসক দল। শহর কলকাতার ১১টি আসনেও কমবেশি একই পরিস্থিতি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেভাবে লড়াইয়েই নেই বিজেপি। উত্তর ২৪ পরগনার ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও লড়াই থাকলেও, সিংহভাগ আসনে জয় পাবে তৃণমূলই।