সেপ্টেম্বরে সংসদে পাশ হওয়ার পরেই কেন্দ্রের কৃষি আইনকে কৃষকদের স্বার্থ বিরোধী বলে অভিযোগ করে প্রতিবাদে নেমে পড়েছিলেন কৃষকরা। প্রায় দুমাস স্থানীয়ভাবে প্রতিবাদ জানানোর পর দিল্লী চলোর ডাক দেন পাঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানার কৃষকরা। বর্তমানে শৈত্যপ্রবাহ, বৃষ্টি উপেক্ষা করেই নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য টানা ৩৯ দিন ধরে দিল্লীর উপকণ্ঠে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা। সোমবার সপ্তম দফার বৈঠক। তবে তার আগেই কৃষকদের আন্দোলনে আরও তেতে উঠল হরিয়ানা। কয়েকশো কৃষক দিল্লীর দিকে মিছিল করে এগোতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। রেওয়ারি-আলওয়ার সীমানাতেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ।
সূত্রের খবর, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ এবং বিক্ষোভকারী কৃষকদের মধ্যে খণ্ডষুদ্ধ হয়। পরিস্থিতি সামলাতে বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে হয় পুলিশকে। রেওয়ারির পুলিশ প্রধান অভিষেক জোরওয়ালকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কৃষকরা এগনোর চেষ্টা করছিলেন। তাঁদের মাসানিতে একটি ওভারব্রিজের কাছে আটকে দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, পাঞ্জাবের সাঙ্গরুর জেলায় এক দল বিক্ষোভকারী কৃষকের উপর লাঠিচার্জ করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি অশ্বিনা কুমার শর্মা একটি বৈঠক করছিলেন। কৃষকরা সেই বৈঠকের দিকে মিছিল করে এগোতে গেলেই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।
উল্লেখ্য, সোমবারের এই বৈঠক নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে কৃষক সংগঠনগুলো। কৃষি আইন প্রত্যাহার এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্য(এমএসপি)-র আইনি গ্যারান্টির দাবি যদি সরকার না মানে তা হলে আন্দোলনকে আরও বৃহত্তর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো। এমনকি প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীর বুকে র্যালি করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, যদি তাঁদের দাবি না মানা হয় তা হলে আগামী ১৩ জানুয়ারি নতুন কৃষি আইনের কপি পুড়িয়ে লোহরি উৎসব পালন করা হবে। কৃষক নেতা মনজিৎ সিংহকে এএনআই-কে বলেছেন, ‘আমরা ১৩ জানুয়ারি কৃষি আইনের কপি পুড়িয়ে লোহরি উৎসব পালন করব। ২৩ জানুয়ারি কিসান দিবস উদযাপন করব।’
সিংঘু সীমানায় আন্দোলনরত আরও এক কৃষক নেতা ওঙ্কার সিংহের কথায়, ‘সরকার তাদের একরোখা মনোভাব ছেড়ে বেরিয়ে আসুক। আমাদের আন্দোলন ৩৮ দিনে পড়েছে। আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত পিছু হটার প্রশ্ন নেই। এটা সত্যি হতাশাজনক যে, এত জন কৃষক মারা যাওয়ার পরেও সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না।’ হাজার হাজার কৃষক কনকনে ঠান্ডা, বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিল্লীতে আন্দোলন চালাচ্ছেন এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। এক কৃষক নেতা হরমিত সিংহ কাদিয়ানের কথায়, ‘বৃষ্টি পড়ছে। তাঁবুগুলোর ভিতরে যাতে জল না ঢোকে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কম্বল, গরম জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বয়স্ক এবং মহিলাদের জন্য।’