বিজেপির মেগা মিছিলে থাকবেন না বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার রাত থেকেই কানাঘুষো একথা শোনা যাচ্ছিল। সোমবার তিনি প্রকাশ্যেই জানিয়ে দেন যে বিজেপির বাইক র্যালিতে তিনি অংশগ্রহণ করবেন না। এরপরই জানা যায়, একই পথে হেঁটে মিছিলে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও।
এমনিতেই কর্মব্যস্ত দিনে বিজেপিকে মিছিলের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তা সত্ত্বেও সোমবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ হুঙ্কার দেন, র্যালি হবেই। কিন্তু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর শোভন চট্টোপাধ্যায়ও বেঁকে বসায় অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। জানা গিয়েছে, শোভনের বাড়ি পৌঁছে তাঁর সঙ্গে কথা বলছে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। দিল্লী থেকে ফোন করেও বোঝানো হচ্ছে। কিন্তু রোড শোয়ে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনড় তিনি। কিন্তু কেন তিনি অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর ১৪ অগস্ট বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শোভন-বৈশাখী। তারপর রাজ্য বিজেপি-র সদর দফতরে সংবর্ধনা নিতে গিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকে শোভনকে ডাকা হলেও ব্রাত্য ছিলেন বৈশাখী। তখনও গোসা হয় বৈশাখীর।
ওই দিনই শোভন-বৈশাখীকে ‘ডাল-ভাত’ বলে বসেন দিলীপ ঘোষ। তাতে বিতর্ক আরও বাড়ে। রাজ্য বিজেপি-র বিজয়া সম্মিলনীতে আমন্ত্রণ নিয়েও গোসা হয়েছিল বৈশাখীর। গত ২২ নভেম্বর সল্টলেকে পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (ইজেডসিসি) বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল রাজ্য বিজেপি। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য শোভনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিজেপি দফতর থেকে বৈশাখীর কাছেই না কি আমন্ত্রণের ফোন গিয়েছিল। ফোনে তাঁকে বলা হয়, রবিবারের অনুষ্ঠানে শোভনকে উপস্থিত থাকতে বলেছেন রাজ্য সভাপতি। বৈশাখীকেও যেতে হবে, এমন কোনও কথা সে ফোনে বলা হয়নি বলেই দাবি করেন বৈশাখী। বান্ধবীর অপমানে অপমানিত বোধ করেন শোভনও। সে বারও মানভঞ্জনে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সক্রিয় হতে হয়। শেষে মান ভাঙাতে বৈশাখীকে ফোন করেন দিলীপ। সে বার ফোনালাপে এতটাই ‘উষ্ণ আবহ’’ তৈরি হয়েছিল যে, দিলীপকে মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণও জানান বৈশাখী। সেই ‘মধ্যাহ্নভোজ-সাক্ষাৎ’ এখনও হয়ে ওঠেনি। কিন্তু তার আগেই আরও এক প্রস্থ ‘গোসা’ সামলাতে হচ্ছে বিজেপি-কে।