ফের গুলিযুদ্ধে কেঁপে উঠল কাশ্মীর। সারারাত পেরিয়ে ভোর অবধি চলল এনকাউন্টার। শ্রীনগরে গুলির লড়াইয়ে তিন আতঙ্কবাদীকে খতম করল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ ও সিআরপিএফের যৌথ বাহিনী। কিন্তু এই এনকাউন্টারের পরেই হইচই শুরু হয়েছে উপত্যকায়। ছড়ি পড়েছে চাঞ্চল্য। নিহতদের পরিবারের দাবি, জঙ্গী সন্দেহে নিরীহ মানুষদের গুলি করে খুন করা হয়েছে। নিহত তিন জনের মধ্যে একজন বছর এগারোর কিশোর রয়েছে বলেও দাবি করেছে তারা।
যদিও এপ্রসঙ্গে সেনা সূত্র জানিয়েছে, নিহত তিনজনের সঙ্গেই জঙ্গী গোষ্ঠীগুলির নিবিড় যোগাযোগ ছিল। সন্ত্রাসবাদীদের হয়ে কাজ করত তিনজনেই। জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গীদের এই হ্যান্ডলারদের ‘ওভার-গ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ বলে থাকেন গোয়েন্দারা। এদের কাজ হল, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির হঙ্গে যোগাযোগ রেখে নাশকতামূলক কাজকর্মে সাহায্য করা। যে তিনজনকে এনকাউন্টারে খতম করা হয়েছে, তারাও হাই-লেভেলের ওয়ার-গ্রাউন্ড ওয়ার্কার ছিল বলেই দাবি করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। তাদের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, নিহত তিন জঙ্গীর একজন ছিল হিজবুল মুজাহিদিন কম্যান্ডার রইস কাচরুর আত্মীয়। ২০১৭ সালে সেনা এনকাউন্টারে খতম হয় রইস। নিহত বাকি দু’জনের একজনের নাম আজাজ মাকবুল গনি। পুলওয়ামার বাসিন্দা। অন্যজন, সোপিয়ানের বাসিন্দা আথার মুসতাক। এই আজাজ মাকবুল গনি গান্ডেরওয়াল জেলার পুলিশের হেড কনস্টেবলের ছেলে বলে জানা গিয়েছে। সেনা সূত্র বলছে, নিহতদের কাছ থেকে একে-৪৭ রাইফেল ও পিস্তল উদ্ধার হয়েছে। সেনা ও পুলিশের বক্তব্য, উপত্যকার সাধারণ মানুষদের দিয়েই নাশকতার কাজ করিয়ে নিচ্ছে জঙ্গীরা। সাধারণত অল্পবয়সীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে কীভাবে গ্রেনেড হামলা চালাতে হয়, গোপনে অস্ত্র পৌঁছে দিতে হয়। জঙ্গীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে এরা। অথচ পরিবারের লোকজনের কাছে তা অজানা থেকে যায়।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই পুঞ্চ জেলার মেন্ধর এলাকার একটি মন্দিরে নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সন্ত্রাসবাদীরা। বিস্ফোরক জমা করছিল তারা। গোপনে কষা হচ্ছিল গ্রেনেড হামলার ছক। সবটাই সুকৌশলে ভেস্তে দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। জঙ্গী সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। সেনা ও পুলিশের বক্তব্য, ওই দু’জনের সঙ্গে পাক জঙ্গী গোষ্ঠীর যোগাযোগ রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে।