অ্যাডিলেডের হতশ্রী হারের পর বেশ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় ভক্তকুল। আজ সেই স্তব্ধতাকেই ভেঙে ফেলল জয়ের আনন্দ। কিস্তিমাত করলেন রাহানেরা। এক দিন বাকি থাকতেই জিতে নিলেন মেলবোর্ন টেস্ট। সিরিজে সমতা ফিরল। চার ম্যাচের সিরিজ এখন ১-১। আত্মবিশ্বাসের আগুন ফেরত এসেছে ভারতীয় শিবিরে।
দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রানে দাঁড়িয়ে ছিল ক্যাঙারুবাহিনী। ভারতের চেয়ে ২ রানে এগিয়ে ছিল তারা। আজ দিনের শুরুতে প্রথম কয়েক ওভার বেশ ধৈর্যের সঙ্গেই সামলাচ্ছিলেন ক্যামেরন গ্রিন ও প্যাট কামিন্স। তারপর অজি-শিবিরে আঘাত হানেন বুমরা। দুর্দান্ত বাউন্সারে কামিন্সকে ফেরান তিনি। এরপর গ্রিন ও লিওঁর উইকেট নেন মহম্মদ সিরাজ। অভিষেক টেস্টেই মোট ৫টি উইকেট নিলেন হায়দ্রাবাদের এই পেসার।
হ্যাজেলউডকে বোল্ড কে অজি-ইনিংসে ইতি টানেন আশ্বিন। ২০০ রানে অলঅাউট
হয় অস্ট্রেলিয়া। জয়ের জন্য ভারতের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৭০। সাবলীলভাবে ইনিংস শুরু করেন শুভমন গিল। মায়াঙ্ক ও পূজারার উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৬ ওভারের মধ্যেই ম্যাচ পকেটে পুরে নেয় টিম ইন্ডিয়া। গিল ৩৫ রানে ও রাহানে ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। উল্লেখ্য, প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন রাহানে। কাজেই ম্যাচ সেরার শিরোপা উঠেছে তাঁরই মাথায়।
বিরাট ও শামি না থাকায় মেলবোর্ন টেস্টের আগে বেশ চাপে ছিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু দলের এমন পারফরম্যান্স ফের স্বস্তি এনে দিয়েছে ভারতীয় শিবিরে। অধিনায়ক তথা ম্যাচসেরা রাহানের মুখে শোনা গেল মহম্মদ সিরাজ এবং শুভমন গিলের ভূয়সী প্রশংসা। তাছাড়াও, মেলবোর্নে জয়ের পিছনে তিনি কৃতিত্ব দিয়েছেন পুরো দলকে। চোট সারিয়ে দলে ফিরেছিলেন অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা। রাহানে বলেন, “উমেশ চোট পেয়ে বেরিয়ে গেলেও আমাদের অসুবিধা হয়নি জাদেজা থাকায়।” মেলবোর্নে অভিষেক ঘটেছে শুভমন এবং সিরাজের। “শুভমন বহু দিন ধরে ভাল খেলছে ঘরোয়া ক্রিকেটে। এই ম্যাচেও নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছে ও। সিরাজ দেখিয়েছে, টানা এক ভাবে বল করে যেতে পারে ও। অভিষেক ম্যাচে এই শৃঙ্খলা বজায় রাখা খুব কঠিন।” জানিয়েছেন অজিঙ্ক।
প্রসঙ্গত, অ্যাডিলেডে ৩৬ অল আউট ও হারের পর ভারতের জয় পাওয়া অসম্ভব মনে করেছিলেন অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়া সহ নেটদুনিয়ায় বয়ে যাচ্ছিল সমালোচনার ঝড়। ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে ক্রমাগত ক্রিকেটারদের বিদ্ধ করছিলেন নেটিজেনরা। এ বিষয়ে রাহানে বলেন, “মাঠে নিজেদের প্রমাণ করাটাই আসল। সবাই অ্যাডিলেড নিয়ে কথা বলছিল। এক ঘণ্টায় বদলে গিয়েছিল সেই ম্যাচে অনেক কিছু। নিজেদের প্রমাণ করে আমরা ফিরে আসতে পেরেছি। এখন সব সমান।”
নিভৃতবাস কাটিয়ে পরের ম্যাচে ফিরছেন রোহিত। যদিও উমেশের চোট কিছুটা চিন্তায় রেখেছে ভারতকে। তবে মেলবোর্নে অজিদের বধ করার পর তৃতীয় টেস্টে অনেকটাই মরিয়া আর সাহসী হয়ে মাঠে নামবেন রাহানেরা।