একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একেই দলের অন্দরে চলা গোষ্ঠীদ্বন্দে দিশেহারা বঙ্গ বিজেপি ব্রিগেড। তার ওপর এবার নয়া নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার দাবিতে বিজেপির অন্দরে চাপ তৈরি করছেন দলের মতুয়া নেতারা। সম্প্রতি বোলপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে সিএএ নয়। শাহের সেই ঘোষণার পর থেকেই ক্ষোভ দানা বেঁধেছে মতুয়াদের মনে। আর এ নিয়ে এখন প্রকাশ্যেই দলের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগছেন খোদ বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এবার যেমন ফের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মতুয়াবাড়ির ছেলে শান্তনু। কেন্দ্রকে তাঁর প্রশ্ন, আইন পাশ হওয়ার পর এক বছর পেরিয়ে গেলেও কেন লাগু হচ্ছে না নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)? রবিবার কালনার শ্রীরামপুরে মতুয়া মহাসংঘের মহা সম্মেলনে মঞ্চ থেকে শান্তনু বলেন, ‘২০১৯ সালে আইন হলেও তা কার্যকর করতে এত ভয় কিসের? বিরোধিতার ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। দাঙ্গার ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। কেউ দাঙ্গা করলে সেটা আমরা বুঝে নেব।’
প্রসঙ্গত, এটাই প্রথম নয়, এর আগেও দ্রুত নাগরিকত্ব আইন লাগু করতে চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন বনগাঁর সাংসদ। কারণ, বনগাঁ এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি মতুয়াদের বসবাস। সিএএ লাগু হলে সবচেয়ে উপকৃত হবেন তাঁরাই। তাই তিনি বারবারই কেন্দ্রের কাছে আইনটি কার্যকর করার আবেদন জানাচ্ছেন। কালনার সভাতেও নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে বক্তব্য রাখেন শান্তনু। তিনি জানান, ২০০৩ সালের আইন অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের পর থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা অন্য দেশ থেকে ভারতে এসেছেন, তাঁরা ভারতবর্ষের নাগরিক নন। আর এই মানুষদের অধিকারের জন্যই মতুয়া মহাসংঘ লড়বে। তাঁর কথায়, ‘৫০ বছর পর এই কেন্দ্রীয় সরকার নাও থাকতে পারে। সামনের টার্মে এই রাজ্য সরকার নাও থাকতে পারে। ৫০ বা ১০০ বছর পর আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কোনও সরকার বলবে তোমাদের পূর্ব পুরুষ ভারতীয় ছিল না। তোমরা ভারতে থাকতে পারবে না তা হবে না। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দায়িত্ব কে নেবে, কেন্দ্র সরকার না রাজ্য সরকার। সিটিজেনশিপ কার্ড না পাওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই করব।’