বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে আবহাওয়া পুরোদস্তুর সরগরম। দলবদল নিয়ে তরজা এখনও অব্যাহত। এর মধ্যেই আজ, তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্বকে তুমুল কটাক্ষ করলেন বারাসাতের তৃণমূল সাংসদ ও চিকিৎসক কাকলি ঘোষ দস্তিদার। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিবিধ প্রকল্প ও রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষা সম্বন্ধে সাংবাদিকদের জানান তিনি। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কাকলি।
ভোট নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের প্রতিবারের ভবিষ্যদ্বাণীকে একহাত নিয়েছেন কাকলি। বলেছেন, ” বিজেপি যা দাবি করে কিছুই মেলে না। শুধু মিথ্যে কথা বলে বিভ্রান্ত করে মানুষকে।” তিনি আরও জানান, অমিত শাহ প্রতিবার বিভিন্ন রাজ্য নির্বাচনের আগে আগাম জয়ের হুঁশিয়ারি দেন। কিন্তু আখেরে কী হয়, দেখেছে দেশবাসী। বিহার ২০১৫ নির্বাচনে সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিল বিজেপি। তারপর ২৪৩টির মধ্যে জিতেছিল ৪৩ টি আসনে। একইভাব ২০১৫ তে দিল্লীতেও ৭০টির মধ্যে মাত্র ৩টি আসন পেয়ে মুখ পুড়েছিল বিজেপির। রাজস্থান,মধ্যপ্রদেশ,ছত্তিসগড়,ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্রেও সরকার গঠনের দাবি করেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু ভরাডুবি হয়েছে সবকটি রাজ্যেই। সম্প্রতি দিল্লী ২০২০ বিধানসভাতেও হয়নি ব্যতিক্রম। ৭০টির মধ্যে মাত্র ৮টি আসনে জিতেছে বিজেপি।
কাকলি এও জানিয়েছেন, অন্য রাজ্যের তুলনায় বাংলায় মহিলারা অনেক সুরক্ষিত। এই ইস্যু ও বিজেপির কুৎসা প্রসঙ্গে মোদী সরকার ও যোগী আদিত্যনাথ পরিচালিত উত্তরপ্রদেশের প্রশাসনকেও কড়া কথায় বিঁধেছেন তৃণমূল সাংসদ। জানিয়েছেন, “কোন রাষ্ট্র নেতা যদি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে মিথ্যে বলেন তাহলে দেশের অকল্যাণ হয়। বিজেপি দেশকে একটা হার্মাদ বাহিনীর আস্তানা তৈরি করেছে, উত্তরপ্রদেশের আইন শৃঙ্খলা দেখলেই বোঝা যায়। বাংলায় মহিলারা সবচেয়ে সুরক্ষিত। আর কিছু ছেলে মেয়েকে ফেসবুকে বসিয়ে দিয়েছে, যারা অপপ্রচার করে বলছে, বাংলায় নারী সুরক্ষা নেই। বাংলার আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা যথেষ্ট ভালো,কঠোর হাতে দুষ্কৃতী দমন করা হয় এখানে। কলকাতার বেহালা, করেয়া, উল্টাডাঙ্গা, তালতলা টালিগঞ্জ, ওয়াটগুঞ্জ, পাটুলি এবং আমহার্স্ট স্ট্রিটে ৮টি মহিলা থানা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ৬৫টি বিশেষ মহিলা থানার তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল, ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৪৮টি। যার উদ্দেশ্য পণ এবং গার্হস্থ্য ঝামেলা, অপহরণ এবং যৌন অপরাধ এর মোকাবিলা করা। এছাড়াও শহরের প্রতিটি থানায় কমপক্ষে তিন জন মহিলা পুলিশ আছে (দুজন কনস্টেবল এবং একজন সাব ইন্সপেক্টর)।
মহিলাদের বিরুদ্ধে যে কোনও অপরাধ রোখার জন্য রাতে নিযুক্ত রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াডে মোতায়েন করা হয়েছে মহিলা কর্মী। ২০১৯-এর এনসিআরবি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পর পর দু’বছর ধরে দেশের ১৯ টি শহরের মধ্যে সবথেকে নিরাপদ কলকাতা। ১৪ টি উপকূলীয় থানা, ৫টি সাইবার-অপরাধ থানা, ৩৮টি শিশু-বান্ধব থানা, ৮৮টি ফার্স্ট ট্র্যাক আদালতের সাথে মহিলাদের ৪৫ টি আদালত এবং ১৯ টি মানবাধিকার আদালত রয়েছে বাংলায়।”
‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প নিয়েও সাংবাদিকদের ওয়াকিবহাল করেছেন কাকলি। তাঁর মতে, এই অভাবনীয় সাফল্যকে ছোটো করতে অপপ্রচার শুরু করেছে বিজেপি। বাংলার মানুষের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করেছেন মমতা। রাজ্য সরকার যেভাবে কাজ করছে তা প্রশংসনীয়। “দুয়ারে সরকার অন্য কোন রাজ্যে হয়নি, পৃথিবীর কোথাও হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। ৯৯% কাজ হয়ে যাবার পর বিজেপির দুষ্কৃতীরা দাবি করবে যে কোনো কাজ হয়নি। ওরা ওই ১% নিয়ে মাতামাতি শুরু করবে। ওরা অপপ্রচার করবার জন্য ওই ১% কাজ যা সম্পূর্ণ করা যায়নি সেটা নিয়ে ভিডিও বানাবে, ছবি তুলবে। সুশাসন কাকে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় দেখিয়ে দিয়েছেন, ভারতের আর কোন মুখ্যমন্ত্রী যা পারেন নি।” জানিয়েছেন বারাসাতের তৃণমূল সাংসদ। আরও বলেন যে, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচী ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে দেড় কোটিরও বেশি মানুষের কাছে। ক্যাম্পে যুক্ত সরকারি কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য দু’মাসে ৫,০০০ টাকা করে টিফিন ভাতা দেওয়ারও ঘোষণা করেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। এই কর্মসূচীর শিবিরে বহু মানুষ আসছেন। তাঁদের মধ্যে র্যাপিড কোভিড পরীক্ষা করানো হলে সংক্রমণের আরও নিখুঁত চিত্র পাওয়া যাবে,তাই জন্য স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে কোভিড পরীক্ষাও করা হচ্ছে। সরকার ৮৭০০ কোটি টাকা এর জন্য রিলিজ করেছে।
এছাড়া কৃষি আইন ও বিশ্বভারতী ইস্যুতেও বিজেপিকে প্রবল কটাক্ষ করেছেন কাকলি। এও বলেন, “দুষ্কৃতীদের দল দুষ্কৃতী এনে বাংলায় গণ্ডগোল করার চেষ্টা করছে।” তিনি আরও জানান, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারত সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন অবিলম্বে ৩টি কৃষি আইন বাতিল করার। তিনি আরেকটি কথাও জান…