এবার মুজফ্ফরনগর হিংসা মামলায় বিজেপি বিধায়ক ও নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল যোগী সরকার। ২০১৩ সালে উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে ৬০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। তৎকালীন অখিলেশ যাদব সরকার একাধিক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেওয়া, সতর্কতামূলক বিধি ভঙ্গ করা এবং সরকারি কর্তব্য পালনে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ এনে মামলা করেছিল। সেগুলোই তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরপ্রদেশের সরকার। রেহাই পেতে চলেছেন বিজেপি বিধায়ক সঙ্গীত সোম, সুরেশ রানা এবং কপিল দেব। গেরুয়া শিবিরের নেত্রী সাধ্বী প্রাচীর নামও এই মামলার তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে বলে হংবাদ সূত্রে খবর।
উত্তরপ্রদেশে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হত্যা এবং পাল্টা হত্যার ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্তই ছিল। তার মধ্যেই নাগলা মান্ডোর গ্রামে একটি জাঠ মহাপঞ্চায়েতে এই চার জনই বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং তাঁদের ‘প্ররোচনামূলক’ বক্তৃতার পরেই পরিস্থিতি আরও জটিল হৎ এবং অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ এনেছিল পূর্ববর্তী সরকার। যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিজেপি নেতানেত্রীদের নাম একাধিক মামলার অভিযুক্তের তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। নতুন সরকারের দাবি, অখিলেশের আমলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই এই সব মামলা দেওয়া হয়েছিল। মুজফ্ফরনগর মামলা সেই ধারাতেই নতুন সংযোজন, এমনটাই জানিয়েছে তারা।
এপ্রসঙ্গে সরকারি কৌঁসুলি রাজীব শর্মা জানিয়েছেন, সরকারি স্তরেই মামলাগুলি সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। জেলাশাসকের তরফ থেকে এ ব্যাপারে আদালতে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। সরকার সব মিলিয়ে মুজফ্ফরনগর হিংসার ঘটনায় মোট ১০০টিরও মামলা বন্ধ করার ব্যাপারে পরামর্শ চেয়েছে। এ ছাড়া মেরঠের সরধানা কেন্দ্রের বিতর্কিত বিধায়ক সঙ্গীত সোমের নামে মোট সাতটি মামলার হালহকিকত জানতে চেয়ে গত বছর আগস্টেই জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছিল সরকার। ২০০৩ থেকে ২০১৭-র মধ্যে মামলাগুলি দায়ের হয়েছিল। সাতটির মধ্যে তিনটি মামলা মুজফ্ফরনগর সম্পর্কিত।
গত বছরই রাজ্যপাল রাম নায়েক রাজ্য সরকারের একটি বিলে অনুমোদন দেন, যেখানে রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের নামে ঝুলে থাকা ২০ হাজার মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ওই বিল পাশ হওয়ার পরপরই সঙ্গীত সোমের ব্যাপারে তৎপরতা শুরু হয়। সরকারের দাবি ছিল, ছোটখাটো গুরুত্বহীন মামলাই কেবল তোলা হবে। সমাজবাদী পার্টির তরফে তখনই বিলটির বিরোধিতা করা হয়। সন্দেহ প্রকাশ করা হয় যে, বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলাও এই বিলের বলে তুলে নিতে পারে বিজেপি।