মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুয়ারে সরকার’ ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্যে সাড়া ফেলেছে। অতঃপর ‘দুয়ারে তারকা’। তরুণ প্রজন্মকে আরও কাছে টানতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ‘টাউনহল’ ধাঁচের কর্মসূচি নিচ্ছে তৃণমূল। এই কর্মসূচিতে ২৫ থেকে ৩৫ বছরের তরুণ-তরুণীদের মুখোমুখি হবেন তারকা রাজনীতিবিদরা। উত্তর দেবেন তাঁদের যাবতীয় প্রশ্নের।
আগামী জানুয়ারি মাস থেকেই ওই তারকাদের দুয়ারে-দুয়ারে যাওয়ার কথা। সেইমতো দল থেকে তাঁদের দিন এবং সময়ও চাওয়া হয়েছে। ওই তালিকায় রয়েছেন মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান, দেব, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, লক্ষ্ণীরতন শুক্ল, ব্রাত্য বসু, মহুয়া মৈত্র এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। এঁদের মধ্যে মিমি, নুসরত, দেব তারকা সাংসদ। এঁরা প্রত্যেকেই ছবির জগৎ থেকে রাজনীতিতে এসেছেন এবং সফল হয়েছেন। প্রসূন প্রাক্তন ফুটবলার এবং লক্ষ্ণী প্রাক্তন ক্রিকেটার। দু’জনেই দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলেছেন। প্রসূন তার পর ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছেন। লক্ষ্ণী বিধায়ক এবং কালক্রমে রাজ্যের মন্ত্রী। তালিকায় রয়েছেন ব্রাত্য। যিনি আদতে নাট্যব্যক্তিত্ব। ডেরেক ছিলেন দেশের অন্যতম পরিচিত কুইজমাস্টার। তিনি বিজ্ঞাপন জগতের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনিও তার পরিবর্তে রাজনীতিতে এসেছেন এবং ধাপে ধাপে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা হয়েছেন।
বিধানসভা ভোটের আগে এঁদের দিয়ে তৃণমূল তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছতে চাইছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। আগামী বিধানসভা ভোটে তরুণ প্রজন্মের একটি বড় ভূমিকা থাকবে বলেই রাজনৈতিক দলগুলি মনে করছে। সেই তরুণ প্রজন্ম বাছতে গিয়ে শাসক শিবির শুধু কলকাতা শহরের উপরেই নজর দিচ্ছে না। তারা মনে করছে, গত ১০ বছরে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকারের ‘উন্নয়ন’-এর ফলে জেলাশহরের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও উচ্চাকাঙ্ক্ষা জন্ম নিয়েছে। তারাও স্বপ্ন দেখতে শিখেছে। কিন্তু তাদের একটা অংশ আবার ‘রাজনীতি-বিমুখ’। তাই তাদের সামনে এই আটজনের দৃষ্টান্ত রাখতে চাইছে তৃণমূল। যাতে ওই তারকারা বলতে পারেন, রাজনীতির জগতটা ‘অচ্ছুত’ নয়। বা রাজনীতির লোক মানেই ‘অপাংক্তেয়’ নয়। তেমন হলে এই তারকারা সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও রাজনীতিতে আসতেন না বা রাজনীতিকে জীবনের আশু লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিতেন না।