বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বাংলায় শিল্পায়ন নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুরে শিল্প গড়তে উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের মানুষের জন্য বড় কর্মসংস্থানের ঘোষণা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তাজপুর সমুদ্র বন্দর, সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো পার্ক, পানাগড়ে বিনিয়োগের কথা জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর আশা, এর ফলে বাংলার যুব সম্প্রদায়ের যেমন কর্মসংস্থান হবে, তেমনই পরোক্ষভাবে আরও শিল্প গড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, তাজপুরে বন্দর গড়তে ইওআই চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। সোমবার অর্থাৎ ২৮ তারিখ সেই বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হবে। অর্থাৎ রাজ্য সরকারের এই বন্দর গড়তে বিশ্ব ও দেশের বিভিন্ন বন্দর নির্মাণ সংস্থার কাছে আবেদন চাওয়া হবে। ৪২০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প গড়তে কোনও জমি অধিগ্রহণ হবে না বলে আরও একবার জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাজপুরে রাজ্যের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দরকে ঘিরে কমপক্ষে ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। সুবিধা হবে লোহা আকরিক রপ্তানিতে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, এই বন্দর তৈরি হয়ে গেলে মেদিনীপুরের সঙ্গে সরাসরি দক্ষিণ-পূর্ব এসিযার যোগাযোগ তৈরি হবে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাঁর এই ঘোষণা যথেষ্ট তাৎপর্যপূণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুখ্যমন্ত্রীর আরেকটি বড় ঘোষণা ছিল সিঙ্গুর নিয়ে। যেখানে রাজ্য সরকার অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে তুলছে রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প দপ্তর। সেখানে ১০ থেকে ৩০ কাঠা জমি নিতে পারবে যে কোনও সংস্থা। পাশাপাশি, সিলিকন ভ্যালিতে জমি দেওয়ার জন্য বিশেষ উইন্ডো খুলছে হিডকো-ও।
এর পাশাপাশি, পানাগড়ের শিল্প পার্কে ৪০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গড়ে উঠবে ফুড প্যাকিং শিল্প। সেখানে ৩৮ একর জমি নিয়েছে ধানুকা গ্রুপ। এ নিয়ে রাজ্য সরকারকে ইতিমধ্যে চিঠিও দিয়েছে বলে খবর। সবমিলিয়ে নতুন বছরে রাজ্যজুড়ে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান হবে বলে এদিন আশা স্বপ্ন দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।