নেহেরুর আমল থেকেই সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ছিল ভারতের। দিল্লীতে সরকার বদলালেও মস্কোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও পরীক্ষিত সম্পর্কের ধারাবাহিকতা বজায় থেকেছে। কিন্তু মোদী জমানায় দিল্লীতে ক্রমেই বাড়ছে আমেরিকা প্রীতি। এহেন পরিস্থিতিতে দুই দশকে প্রথমবার পিছিয়ে গেল ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী-সহ অনেকেরই অভিযোগ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করছে কেন্দ্র সরকার।
বার্ষিক সম্মেলন পিছিয়ে যাওয়ায় মোদী সরকারকে একহাত নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী একটি সংবাদপত্রের রিপোর্ট উল্লেখ করে বলেছেন, ‘রাশিয়া ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। আমাদের ঐতিহ্যগত সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করা হলে তা অদূরদর্শিতার কাজ হবে, যা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক।’ ভারতের বিদেশমন্ত্রক অবশ্য সাফ জানিয়েছে করোনা মহামারীর জন্যই যৌথভাবে বার্ষিক সম্মেলন পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লী ও মস্কো। এর নেপথ্যে কোনও কূটনৈতিক মন কষাকষি নেই।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসে কিউইউএডি মন্ত্রীগোষ্ঠীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নয়াদিল্লীর কোয়াড নির্ভরতা নিয়ে প্রকাশ্যেই বিরোধিতা জানিয়েছিল মস্কো। ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা মিলে তৈরি হয়েছে এই গোষ্ঠী। এই বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় ছিল দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা আগ্রাসন। এশিয়ায় চীনের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রশমিত করতে চায় আমেরিকা। এদিকে ভারতের সঙ্গে চীনের সম্পর্কও খুব ভাল পরিস্থিতিতে নেই। গত মে মাস থেকে লাদাখে সীমান্তের উত্তেজনায় আরও অবনতি হয়েছে সেই সম্পর্কে। এই পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে লড়তে ভারতকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে চায় আমেরিকা। দু’দেশের সম্পর্কও খুব ভাল জায়গায় রয়েছে। ওই বৈঠকের পরই রাশিয়াকে আশ্বস্ত করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেও ভারত যে রাশিয়া বিরোধী কোনও গোষ্ঠীতে যাবে না, সেই প্রচ্ছন্ন বার্তাই দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।