দেশজুড়ে বেড়ে চলা কৃষক আন্দোলনের উত্তাপের মাঝেই এবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই চিঠিতে এ রাজ্যের কৃষকদের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প লাগু করার আবেদনে এ নিয়ে দ্বিতীয় চিঠি লিখলেন তিনি। ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্পের কৃষকরা যে সুবিধা পান, মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে কেন্দ্রের কাছে তা বাংলায় লাগু করার আবেদন করলেও এখনও চালু হয়নি। এর মাঝে নতুন তিনটি কৃষি আইন নিয়ে রাজধানীর মাটিতে কৃষক বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই আবহে ফের কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরকে লেখা মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংল ও কিছু বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, ‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’ এবং ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’ – এই দুই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা ইচ্ছে করেই গ্রহণ করছে না বিরোধী শাসিত বাংলা, যার জেরে এখানকার কৃষক এবং সাধারণ মানুষজন বঞ্চিত হচ্ছেন – বারবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিশেষত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে সরব কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকী এই দুই সুবিধা চালু না করায় মুখ্যমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। উত্তরে রাজ্যও বারবার জানিয়েছে যে এখানে সাধারণ মানুষ এবং কৃষকদের জন্য রাজ্য সরকারের যে প্রকল্প দুটি রয়েছে – স্বাস্থ্যসাথী এবং কৃষকবন্ধু, তার সুবিধা কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির তুলনায় অনেক বেশি। তাই রাজ্যবাসী কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা এখানকার মানুষজন না পেলেও খুব সমস্যা হবে না। দিল্লীর নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে, বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব, সকলেই মমতাকে এ ইস্যুতে আক্রমণ করেছেন।
এসব সমালোচনার জবাবে সেপ্টেম্বরে নিজে কেন্দ্রকে চিঠি লিখে এই দুই প্রকল্প বাংলায় চালু করার আবেদন জানান মমতা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের আলাদা করে চিঠি লেখেন তিনি। এরপর তিনমাস কেটে গেলেও কিষাণ সম্মান নিধি এখনও চালু হয়নি এ রাজ্যে। ওদিকে, নয়া তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লিতে কৃষক বিক্ষোভের সুর চড়ছে ক্রমশ। আর তা সামাল দিতে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী সবচেয়ে বিপাকে। কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়িয়ে কৃষিমন্ত্রীকে চিঠিও লিখে ফেললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, যাতে তিনি আগেরবারের চিঠিটিও সংযোজন করেছেন। এবার তিনি সরাসরি টাকাই চাইলেন কেন্দ্রের থেকে। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কৃষকদের জন্য বরাদ্দ অর্থ পাঠানো হোক বাংলায়। তা হাতে পেলেই নিয়ম মেনে সুবিধাপ্রাপ্তদের তালিকা তৈরি করে জমা দেওয়া হবে কেন্দ্রের কাছে।