প্রসঙ্গত, রবিবারই বোলপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে সিএএ নয়। সাধারণত ভোটের মুখে প্রতিবারই এমন আশ্বাস থাকে। সেই ২০০৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত কখনও অনশন, কখনও অবস্থান, কখনও আন্দোলন করেও আজও মেলেনি নাগরিকত্ব। এখন নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাসের পর রাজ্যের মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত লাখ লাখ ভোটারদের নাগরিকত্বের উপর বৈধতার সিলমোহর পড়ার সম্ভাবনা জোরাল হয়েছিল। ভোটের মুখে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের মুখে শোনাও গিয়েছিল সেকথা। কিন্তু অমিত শাহের গতকালের ঘোষণার পর কী ক্ষোভ দানা বেঁধেছে মতুয়াদের মনে। নিজেদের কলের পুতুল মনে করে মতুয়াদের এবার স্পষ্ট দাবি, আগে নাগরিকত্ব, পরে ভোট।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি নাগরিকত্ব ইস্যুতে ক্ষোভপ্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল মতুয়াবাড়ির ছেলে, স্থানীয় বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে। ভোটের মুখে ভোটব্যাঙ্ক বাঁচাতে, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে, ঠাকুরবাড়ি এসে শান্তনুকে সামাল দেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এমনকি শোনা গিয়েছিল যে অমিত শাহের বঙ্গ সফরেও থাকবে ঠাকুরবাড়ি। যদিও পরে সেই কর্মসূচী বদলে যায়। ফের বেসুরো হয়ে এবার শান্তনু বলছেন, ‘করোনার ভ্যাকসিন জরুরি, করোনা পরিস্থিতির জন্য দেরি হচ্ছে, সেটা যেমন রয়েছে। কিন্তু অন্য়দিকে সিএএ একটা অভ্যন্তরীণ বড় সমস্যা। ভারত সরকারের উভয়কক্ষে নাগরিকত্ব আইন পাস হয়েছে। এবার সেটা প্রয়োগ হওয়া জরুরি।’
তাঁর দাবি, ‘নাগরিকত্বের জন্য দীর্ঘ ৭৪ বছর ধরে প্রায় দেড় কোটি মানুষ ভুক্তভোগী। বিভিন্ন সময়ে সরকার এসেছে। আমরা উদ্বাস্তু সমাজ, মতুয়া সমাজ বার বারই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু ভোটব্যাঙ্কের খাতিরেই কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা এটা করেননি বলে আমার মনে হয়। এখন বর্তমান ভারত সরকার যখন আইন এনেছে, তখন আমরা চাই যত দ্রুত হয়, সেটা প্রয়োগ হোক।’ একইসঙ্গে রায়গঞ্জের রেল ময়দানে মতুয়াদের জনসভা থেকে ক্ষুব্ধ শান্তনু ঠাকুরের স্পষ্ট দাবি, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে এসে মতুয়া সমাজে বলুন যে উনি আগামীতে সিএএ নিয়ে কী করতে চাইছেন? কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন? কবে সিএএ প্রয়োগ হতে পারে? সবটা স্পষ্ট করে মতুয়া সমাজে এসে জানান শাহ।’