বিধানসভা নির্বাচনের আগে অমিত শাহের বঙ্গ সফর নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। তার ঠিক পরেরদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একহাত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার প্রমাণ-সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবির পাল্টা জবাব দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার গভীর রাতে বঙ্গে আসেন অমিত শাহ। ঠাসা কর্মসূচি নিয়ে শনিবার মেদিনীপুর এবং রবিবার বীরভূমে যান তিনি। পরপর দু’দিনই দুই জায়গা থেকে বাংলার সরকারকে একহাত নেন। বারবার দাবি করেন বিধানসভা নির্বাচনে জিতলে সোনার বাংলা গড়ে দেখাবে গেরুয়া শিবির। সোমবার অমিত শাহের সোনার বাংলা গড়ার ডাকেরই তীব্র বিরোধিতা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর খোঁচা, ‘সোনা, রুপো, তামার মানে জানেন? গোলা, দাঙ্গা, আগ্নেয়াস্ত্র জানেন তো?’ রবীন্দ্রনাথকে অপমান করা হচ্ছে বলেও তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্র সংস্কৃতি আমাদের গর্ব, রাঙামাটির মানুষদের নিয়ে মিছিল করব বোলপুরে। রবীন্দ্রনাথ নাকি জোড়াসাঁকোতে না, বিশ্বভারতীতে জন্মেছেন। ওদের একাত্মবাদ, বহুত্মবাদ নিয়ে গবেষণা করতে হবে এবার। রবীন্দ্র, নজরুলের আন্তর্জাতিক চেতনার জন্য বিশ্বে খ্যাতি। রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ পড়তে বলুন। রবীন্দ্রনাথ নিয়ে অবমাননা মানব না। জনগনমণ বদলে দেবে? রক্ত দেওয়ার জন্য তৈরি থাকব, কিন্তু জনগণমনকে অপমান মানব না।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কংগ্রেস ছেড়ে যাওয়া, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে বঞ্চনা, পিএম কিষাণ যোজনা নিয়ে বঞ্চনা, বিজেপি কর্মীদের ‘খুন’, নরেন্দ্র মোদীর পাঠানো খাদ্যশস্য তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে নেওয়া, জেপি নাড্ডার বাংলা সফরে পর্যাপ্ত সুরক্ষা না দেওয়া, নরেন্দ্র মোদী বাংলার গরিব মানুষদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছেন-সহ একাধিক দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই দাবিগুলিও খারিজ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, ‘অমিতজি, আপনার মুখে এত মিথ্যে কথা মানায় না।’ আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রমাণ-সহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবির পাল্টা জবাব দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি তাঁর। ওইদিন ঠিক কী বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিকেই তাকিয়ে গোটা রাজনৈতিক মহল। এদিকে, সিএএ নিয়েও বিজেপিকে একহাত নেন তিনি। বলেন, ‘বিজেপি চিটিংবাজ পার্টি। যা ইচ্ছে বলতে পারে। সিএএ করল কেন? ১৯৭১ এর আগে যারা এসেছেন প্রত্যেকে এ দেশের নাগরিক। মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করছে। ওরা কে কারও ভাগ্য ঠিক করে দেওয়ার? নিজেদের ভাগ্য নিজেরা ঠিক করুক। আমরা লড়াই লড়ে নেব।’