ক্রমশই আরও ব্যাপক আকার ধারণ করে চলা কৃষক আন্দোলন থামাতে প্রথম থেকেই বিজেপির তরফে এই অভিযোগ করা হয়েছিল যে, বিরোধীরা কৃষকদের ভুল পথে চালিত করছে। শুধু তাই নয়, বিজেপির বিভিন্ন স্তর থেকে অভিযোগ এসেছে যে এই কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে খালিস্তানি পন্থী জঙ্গিরা। আইএসআই এবং চীনের ইন্ধনে এই আন্দোলন বৃহৎ আকার ধারণ করছে বলেও অভিযোগ তুলেছে গেরুয়া শিবির। তবে কিছুতেই কিছু না হওয়ায় এবার অন্য পথ নিল কেন্দ্রীয় সরকার। রবিবার সকালে হঠাৎই দিল্লীর গুরুদ্বারে হাজির হয়ে চমক দিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শহিদি দিবসে সেখানে শিখ ধর্মগুরু তেগ বাহাদুরের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন মোদী। উপস্থিত ধর্মপ্রাণ আমজনতার সঙ্গে সেলফিও তোলেন। প্রধানমন্ত্রী গুরুদ্বারে এলেও কোনও বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না তাঁর জন্য। বাধা পড়েনি আমজনতার আনাগোনাতেও। ফলে দিল্লী সীমান্তে চলতে থাকা কৃষক বিক্ষোভের মাঝেই প্রধানমন্ত্রীর এই গুরুদ্বার সফর, যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
প্রসঙ্গত, আগেভাগে মোদী আগমনের কোনও পরিকল্পনা ছিল না বলেই খবর। এদিন কনকনে ঠান্ডার মধ্যের নিজের বাসভবন থেকে সটান গুরুদ্বার রাখাব গঞ্জ সাহিবে হাজির হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে ধর্মগুরু তেগ বাহাদুরের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। উপস্থিত জনতার সঙ্গেও কথা বলেন। শনিবারই তিনি টুইটারে লিখেছিলেন, ‘তেগ বাহাদুরজির জীবন সাহস ও করুণার প্রতিলিপি। শহিদি দিবসে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। অখণ্ড সমাজের জন্য তাঁর আর্দশ মেনে চলা উচিত।’ উল্লেখ্য, এদিন দিল্লী সীমানায় কৃষকরাও শহিদি দিবস পালন করছেন। কৃষি আইন প্রত্যাহারের আন্দোলনে ইতিমধ্যে ৩৩ জন চাষির মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। তাঁদের আত্মবলিদানকে স্মরণ করই এই দিনটি পালন করছেন তাঁরা। এদিন প্রধানমন্ত্রীর গুরুদ্বার সফরের পর অনেকেই কটাক্ষ করছেন, গুরুদ্বারের মতো কৃষকদের সঙ্গেও তো দেখা করে আসতে পারতেন প্রধানমন্ত্রী। প্রশ্ন উঠছে, কৃষক বিক্ষোভ রুখতে কি এবার ধর্মীয় ভাবাবেগকে হাতিয়ার করতে চাইছেন মোদী?