কৃষি আইন ইস্যুতে এবার কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় মুখর হলেন বাংলার বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, জৈবপ্রযুক্তি মন্ত্রী তথা নাট্যব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসু। পাশাপাশি সেই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষক-বন্ধু প্রশংসা করেন তিনি। মোদী সরকারের নয়া কৃষি আইন নিয়ে কৃষকেরা ক্ষুব্ধ। কিন্তু বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকরা কোনও আন্দোলন করেননি, এমন দাবি করেছেন ব্রাত্য। তিনি জানান, বাংলায় কৃষকরা সুরক্ষিত এবং নিরাপদে রয়েছেন। ব্রাত্য মনে করেন, কেন্দ্রের পিএম কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পের তুলনায় রাজ্যের কৃষক-বন্ধু অনেক জনমুখী প্রকল্প। মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘রাজ্যের প্রকল্পে কৃষকরা একর পিছু পাঁচ হাজার টাকা পান। সেই জায়গায় পিএম কিষাণ প্রকল্পে একর পিছু ১২১৪ টাকা দেওয়া হয়। এই টাকাও আবার সকলে পায় না। অন্তত দু’হেক্টর জমি থাকলে তবেই এই প্রকল্পের টাকা পাওয়া যায়।’ ‘কেন্দ্রের কালা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন চলছে, কিন্তু বাংলায় কোনও কৃষক আন্দোলন নেই। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষক বন্ধু প্রকল্প করেছেন।’ এমন সুরেই কেন্দ্রের কৃষি আইনেক কটাক্ষ করেছেন ব্রাত্য।
দিল্লী-সহ উত্তর ভারতে লাগাতার কৃষক আন্দোলনের নেপথ্য রয়েছে ২৫০-র বেশি কৃষক সংগঠনের এই মঞ্চ এআইকেএসসিসি। আজ, বুধবার প্রথম পশ্চিমবঙ্গে এই মঞ্চের বড় কর্মসূচী হতে চলেছে। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে দু’টি বড় মিছিল রানি রাসমণি অ্যাভেনিউয়ে আসবে। অন্তত ২০-২৫ হাজার মানুষের জমায়েত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। হান্নান মোল্লা, অমল হালদার, অমিয় পাত্র, কার্তিক পাল প্রমুখ কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনের নেতৃত্ব এই রাজভবন অভিযানে থাকবেন।
কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দেশের যে কৃষকদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাঁরাও সঠিক সময়ে কিস্তির টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ব্রাত্যর। তাঁর দাবি, ‘২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের তথ্য বলছে এই রাজ্যে কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ৯৪ শতাংশ কৃষক প্রথম আট মাসেই কিস্তির টাকা পেয়েছেন। সেই জায়গায় পিএম কিষাণ প্রকল্পে ৪৮ শতাংশ কৃষক কিস্তির টাকা পাননি।’ এ ছাড়া রাজ্যে ১৮-৬০ বছর বয়স্ক কোনও কৃষকের মৃত্যু হলে সরকার ২ লক্ষ টাকা দেয়। কেন্দ্র এখনও এমন কোনও প্রকল্প চালু করতে পারেনি। এই তথ্য তুলে ধরেই ব্রাত্য বোঝাতে চেয়েছেন, ২০১১ সালে মমতা রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে এই উন্নয়নের কারণে বাংলায় কোনও কৃষক আন্দোলন হয়নি। সেখানে কয়েক বছর আগে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশে তুমুল কৃষক আন্দোলন হয়েছে। সে তুলনায় বাংলায় কৃষকেরা অনেক সুরক্ষিত ও নিরাপদে রয়েছেন।