লাগাতার ২০ দিন ধরে কৃষক বিক্ষোভ চলছে দিল্লী সীমানায়। সেই বিক্ষোভের জেরে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ছে অর্থনীতি। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। তাই এই দ্রুত সমস্যা মেটানোর আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিক্ষোভকারী কৃষক সংগঠনগুলিকে চিঠি দিল বণিক সংগঠন অ্যাসোচেম।
সেই চিঠিতে বণিকসভা দাবি করেছে, দিল্লী সীমানায় চলতে থাকা অবস্থান বিক্ষোভের জেরে কৃষি, পশুপালন-সহ একাধিক ক্ষেত্রে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। বিভিন্ন সীমানা বন্ধ থাকায় বেড়েছে যানজট। ফলে পণ্য পরিবহণের খরচ অনেকটাই বাড়িয়ে দিচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়ছে। করোনা পরবর্তী সময় এই বিপুল দৈনিক ক্ষতি দেশের অর্থনীতির পক্ষে বিপজ্জনক বলেও মনে করছেন ওই সংগঠনের সদস্যরা। এমনকী, ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছে রেলও। এদিন উত্তর রেলের জেনারেল ম্যানেজার আশুতোষ গঞ্জাল জানান, কৃষক বিক্ষোভের জন্য ইতিমধ্যে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের চলাচলের দরুন আড়াই হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
অ্যাসোচেমের তরফে চিঠিতে জানানো হয়েছে, পাঞ্জাব-হরিয়ানা-হিমাচলপ্রদেশ ও দিল্লীতে একাধিক ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। রয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, সুতির পোশাক, গাড়ির যন্ত্রাংশ, কৃষি যন্ত্রাংশ, আইটি-সহ একাধিক ক্ষেত্র। এমনকী, কৃষিকর্ম ও পশুপালনের একটা বড় অংশ রয়েছে এই এলাকাগুলিতে। এছাড়া, পর্যটন-হসপিটালিটি-পরিবহণের মতো ব্যবসায়ও এই এলাকাগুলিকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। কিন্তু ক্রমাগত বিক্ষোভের জেরে সমস্ত ইন্ডাস্ট্রির কাজই থমকে থাকছে। কিংবা খুব ধীরগতি এগোচ্ছে কাজ। ফলে লজিস্টিক খরচ অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। যা সংস্থাগুলিকে লোকসানের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে ফেলার আর্জি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে অ্যাসোচেম।
উল্লেখ্য, বাদল অধিবেশনে নয়া তিন কৃষি আইন পাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। নয়া আইন কার্যকর হলে নূন্যতম সহায়ক মূল্যে সরকার আর ফসল কিনবে না, জমি কেড়ে নিতে পারে বেসরকারি সংস্থা-সহ একাধিক আতঙ্কে ভুগছেন কৃষকরা। তাই এই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সেই দাবিতে দিল্লির পাঁচ সীমানা ঘিরে আন্দোলন করছেন একাধিক কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। যার জেরে শিল্পক্ষেত্রে একাধিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ।