সাত দিন হাসপাতালে কাটিয়ে মঙ্গলবারই বাড়ি ফিরেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ হাসপাতাল থেকে ফেরার আগে চিকিৎসক, নার্স সহ হাসপাতালে তাঁকে দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা প্রত্যেককে বার বার ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী৷ একই সঙ্গে হাসপাতালে থাকাকালীন তাঁর জন্য যেন অন্য রোগীদের কোনও অসুবিধা না হয়, এমনটাও অনুরোধ করেছেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এবার সিগারেট পাকাপাকিভাবে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।
বুদ্ধদেববাবুর সিগারেট-আসক্তির কথা তেমন অজানা নয়। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনও ঘন ঘন সিগারেটে টান দেওয়ার অভ্যাস ছিল তাঁর। কিন্তু এই সিগারেটের নেশাই তাঁর অসুস্থতার অন্যতম কারণ৷ গত কয়েক বছরে স্বাস্থ্য ভেঙেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর৷ বেশ কয়েকবার অসুস্থ হয়েছেন তিনি৷ গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার জন্য দক্ষিণ কলকাতার এই একই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল বুদ্ধদেববাবুকে৷ তখনও চিকিৎসকরা সিগারেট বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সিগারেটকে ছাড়তে পারেননি তিনি৷ নিয়মিত বাই প্যাপ চললেও দীর্ঘদিনের আসক্তির কারণেই নিয়মিতই সিগারেটে টান দিতেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী৷ সূত্র অনুযায়ী, এ বারেও তাঁকে ভেন্টিলেশন থেকে বের করার পরই একটু ধাতস্থ হয়ে উঠেই ফের সিগারেট চান বু্দ্ধদেব৷ কিন্তু চিকিৎসকরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর যা শারীরিক পরিস্থিতি, তাতে এবার সিগারেট না ছাড়লে তা চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে৷ জানা গিয়েছে, এর পরেই পাকাপাকি ভাবে সিগারেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন বুদ্ধদেব৷ চিকিৎসকদের তিনি কথা দিয়েছেন, আর ধূমপান করবেন না৷
চিকিৎসকেরাও স্বীকার করে নিয়েছেন, এ বার অত্যন্ত গুরুতর অবস্থায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল৷ ফলে, এবার তাঁকে বাড়ি ফিরে চিকিৎসকদের সব পরামর্শ মেনে চলতেই হবে৷ নাহলে অসুস্থতার আশঙ্কা আবার বাড়বে।
প্রসঙ্গত, শেষ ক’বছরে বার বার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ৷ চিকিৎসক, পরিবারের সদস্যরা নিষেধ করা সত্ত্বেও এতদিন কিছুতেই সিগারেটকে ছাড়তে পারেননি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ অবশেষে ধূমপানে ইতি টানছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী৷ এবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময় চিকিৎসকদের কথা দিয়েছেন, আর সিগারেট খাবেন না তিনি। শুধু সিগারেট ত্যাগই নয়, পাশাপাশি চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে নিয়ম করে ওষুধ খাওয়া, বাই প্যাপ নেওয়া সহ খাওয়া দাওয়ার প্রতিও তিনি যত্নশীল হবেন বলে কথা দিয়েছেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।