এবার কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সরব হলেন দেশের ৭৮ জন প্রাক্তন আমলা। একটি খোলা চিঠিতে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্র সরকার তিনটি কৃষি আইন পাশ করাতে গিয়ে সাংবিধানিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করেছে। পাশাপাশি আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলির সুরেই তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যের এক্তিয়ারে থাকা কৃষি আইনে ব্যাপক রদবদল করে কেন্দ্র যে ভাবে এই তিনটি আইন পাশ করিয়েছে, তাতে সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সরাসরি আঘাত করা হয়েছে।
চিঠির বক্তব্য, কৃষি রাজ্যের এক্তিয়ারে থাকলেও তাতে ব্যাপক রদবদল করে কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত করেছে। পাশাপাশি, এই আইন যাদের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে, সেই কৃষকদের সঙ্গেই কথা বলেনি সরকার! সংসদেও বিরোধীদের বক্তব্য শোনা হয়নি। রাজ্যসভায় ধ্বনিভোটে বিলটি পাশ করানো নিয়েও সরব হয়েছেন প্রাক্তন আমলারা। এই খোলা চিঠিতে মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে প্রাক্তন আমলারা এই আইন পাশের সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্র হয়তো ভেবেছিল অতিমারির মধ্যে জমায়েত করবেন না প্রতিবাদীরা।
তিনটি কৃষি আইন পাশের পরেই তা নিয়ে সরব হয়েছিল একাধিক কৃষক সংগঠন এবং বিরোধী দল। কৃষক সংগঠনগুলি বারবার এই তিনটি আইন রদ করার দাবি জানালেও তাতে কান দেয়নি মোদী সরকার। তখনই কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে গলা মিলিয়ে বিরোধীরা অভিযোগ করেন, সংসদে সংখ্যার জোরে এবং কর্পোরেট স্বার্থে এই তিনটি আইন পাশ করিয়েছে মোদী সরকার। এর ফলে একদিকে যেমন মজুতদারি বাড়বে, কমবে সরকারি নিয়ন্ত্রণ, তেমনই বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের কালোবাজারির আশঙ্কাও বাড়বে। কিন্তু মোদী সরকার নিজেদের অবস্থানে অনড়ই থাকে। এই অবস্থায় পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশে-সহ একাধিক রাজ্য থেকে আসা কৃষকেরা একযোগে গত দু’সপ্তাহ ধরে রাজধানী দিল্লী কার্যত অবরুদ্ধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনাতেও কৃষকদের দাবি মেনে তিনটি কৃষি আইন বাতিল করেনি কেন্দ্র। তার মধ্যেই এ দিন প্রাক্তন আমলাদের খোলা চিঠি কার্যত কৃষক সংগঠনগুলির দাবিকেই সমর্থন করল।