টানা তিন ম্যাচে জয়ের পর আটকে পড়ল এটিকে মোহন বাগান। সোমবার আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের দলকে একাই হারিয়ে দিলেন জামশেদপুরের পরিচিত স্ট্রাইকার নেরিজাস ভালকিস। ম্যাচে দু’টি গোলই সেট পিস থেকে হজম করে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। এদিন মোহন বাগান মোট ন’টি কর্নার উপহার দেয় প্রতিপক্ষকে। এবারের আইএসএলের প্রথম তিনটি ম্যাচে সেভাবে পরীক্ষার মুখোমুখি হননি সন্দেশ, প্রীতমরা। এদিন চাপের মুখে কার্যত অসহায় আত্মসমর্পণ করলেন তাঁরা। দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার তিরিও ব্যর্থ হন।
গতির বিস্ফোরণে গোটা ম্যাচে বাগানের দুই উইং ব্যাক প্রীতম কোটাল ও শুভাশিস বসুকে কার্যত নাজেহাল করে দেন জামশেদপুরের জ্যাকিচাঁদ সিং। এদিন মাঝমাঠে জাভি হার্নান্ডেজের পরিবর্তে ব্র্যাড ইনমানকে দলে রাখেন কোচ হাবাস। কিন্তু এই অজি মিডিও মোটেই সুবিধা করতে পারেননি। তাঁর পাশে গ্ল্যান মার্টিন্সও ছিলেন নিষ্প্রভ। দলের হারের দায় কোনও মতেই এড়াতে পারেন না এই মিডিও। অন্তত তিনটি সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি।
প্রথম তিনটি ম্যাচ জিতে ছন্দে ছিল মোহন বাগান। কিন্তু জামশেদপুরের কোচ ওয়েন কোয়েল প্রতিপক্ষকে গুরুত্ব দিলেও সমীহ করেননি। তিনি ৪-৩-৩ ছকে দল সাজান। তাঁর এই স্ট্র্যাটেজির প্রভাব রয়েছে ম্যাচের ফলে। প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে দু’টি কর্নার প্রতিপক্ষকে উপহার দেয় হাবাস-ব্রিগেড। ৪ মিনিটে কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে ম্যাচে নজর কাড়া মনরয়ের শট কোনওক্রমে আটকে দলের পতন রোধ করেন অরিন্দম। গোটা ম্যাচে তিনটি নিশ্চিত গোল বাঁচান তিনি। পক্ষান্তরে, ১২ মিনিটে এডু গার্সিয়ার শট তৎপরতার সঙ্গে রুখে দিয়েছিলেন জামশেদপুর গোলরক্ষক রেহনেশ। এদিন জেএমসি’র কোচ ডাবল কভারিংয়ে মোহন বাগানের প্রাণভ্রমরা রয় কৃষ্ণাকে রুখে দেন। ফিজির এই স্ট্রাইকারকে কড়া নজরে রাখেন হার্টলে ও ইজে। তাঁকে রুখতে মাঝেমধ্যে ফিজিক্যাল ফুটবল খেলতেও দ্বিধাবোধ করেননি জামশেদপুরের দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার। ম্যাচের ২৫-৩০ মিনিটের মধ্যে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনে জেএমসি। ২৯ মিনিটে মনরয়ের প্রয়াস গোললাইন সেভ করেন প্রীতম কোটাল। তবে এক মিনিট বাদেই জেএমসি’র মিডিওটির তোলা কর্নার থেকে হেডে নিখুঁত লক্ষ্যভেদ ভালকিসের (১-০)। উল্লেখ্য, ভেসে আসা বলের ফ্লাইট মিস করেন সন্দেশ ঝিংগান।
প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে থাকায় বিরতির পর মনবীরকে মাঠে এনে আক্রমণে তীব্রতা বাড়িয়েছিলেন হাবাস। ওই পর্বে গোলরক্ষক রেহনেশের মতোই উজ্জ্বল ছিলেন দীর্ঘদেহী হার্টলে। খেলার গতির বিরুদ্ধে ৬৬ মিনিটে দলের তথা নিজের দ্বিতীয় গোলটি সেরে ফেলেন ভালকিস। এবার মনরয়ের ভাসানো কর্নার থেকে সাজানো আক্রমণে জাল কাঁপান তিনি (২-০)। দু’গোলে পিছিয়ে পড়ে মরিয়া মোহন বাগান আক্রমণে তীব্রতা বাড়ায়। ৮০ মিনিটে ম্যাকহ্যাগের বাড়ানো বল প্রতিপক্ষের এক ফুটবলারের গায়ে লেগে বক্সে উড়ে এলে অফসাইডে থাকা রয় কৃষ্ণা ব্যবধান কমান (২-১)। সবুজ-মেরুনের তারকা স্ট্রাইকার তিন গজ ভিতরে থাকলেও, এই গোলকে কেন রেফারি বৈধতা দিলেন তা নিয়ে ফুটবলপ্রেমীরা বিস্মিত। আইএসএলের রেফারির মান নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। এবার রয় কৃষ্ণার এই গোল তা আরও জোরাল করল।