বেসরকারিকরণের উল্টোপথে হেঁটে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের। পিপিপি মডেলে তৈরি পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডাল বিমানবন্দরের অধিকাংশ শেয়ার নিল রাজ্য। জমিদাতাদের প্রত্যেককে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। রাজ্যের অধীনে অধিকাংশ শেয়ার থাকায় বিমানবন্দরের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণেও সরকারি কর্তৃত্ব থাকবে বেশি। মঙ্গলবার রানিগঞ্জে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা থেকে এই উল্লেখযোগ্য ঘোষণা করলেন মুখ্যসচিব। পরে মুখ্যমন্ত্রী গোটা পদ্ধতির বিস্তারিত জানালেন।
২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার আগে অন্ডালে বিমানবন্দর তৈরির জন্য পিপিপি মডেলে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে চুক্তির মাধ্যমে রাজ্য সরকার জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণের কথা জানায়। অন্ডালে কাজি নজরুল বিমানবন্দর চালুর পরও সেভাবে আয় না হওয়ায় তা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই জায়গা থেকে বিমানবন্দরটিকে ফের চাঙ্গা করে তুলতে রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করল। ৪৮ শতাংশ শেয়ার এল রাজ্যের হাতে, আগে যা ছিল ২৬ শতাংশ। আজ থেকে জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজও শুরু হল।
মুখ্যমন্ত্রী সভা থেকে জানালেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী, যাঁরা ৩৩ ডেসিমেলের বেশি জমি দিয়েছিলেন, তাঁরা বদলে জমিই পাবেন নতুন জায়গায়। আর বাকিরা আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবেন। সেইমতো আজ ১৫২৯টি কৃষক পরিবারকে জমি দেওয়া হল। বাকিরা আর্থিক সাহায্য পেলেন। আরও কয়েকটি পরিবারের টাকা পাওয়া বাকি রয়েছে, তাঁরাও পেয়ে যাবেন।’ পাশাপাশি, বিমানবন্দরকে সচল রাখতে রাজ্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজকর্ম দেখভালের জন্য মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দিলেন।
দেশের বিমানবন্দরগুলি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। কেরালা-সহ একাধিক রাজ্যের ৩ টি বিমানবন্দর সম্প্রতি কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। তবে এর ঠিক উল্টোপথেই হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, তিনি বরাবরই বেসরকারিকরণের বিরোধী। তাই অন্ডাল বিমানবন্দরের অধিকাংশ শেয়ার নিয়ে তা সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীনে আনল তাঁর সরকার।