ওয়ানডে সিরিজের হারের পর বেশ মুষড়ে পড়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটমহল ও ভক্তকুল। যদিও শেষ ম্যাচ জিতে কিছুটা মানরক্ষা করে ভারত। হয়তো সেই জয়টাই মানসিকভাবে তাতিয়ে দিয়েছিল ‘মেন ইন ব্লু’ কে। শুক্রবার ক্যানবেরার মানুকা ওভালে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দেওয়ার পর রবিবার সিডনিতে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিও ছয় উইকেটে জিতে নিলেন বিরাটরা। সাথে তিন ম্যাচের সিরিজের এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ পকেটে পুরে নিল টিম ইন্ডিয়া।
প্রথমে ব্যাট করে ১৯৪ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। আদর্শ ব্যাটিং ট্র্যাকে এই রান তাড়া করতে খুব একটা সমস্যায় পড়েননি বিরাটরা। রাহুল (২২ বলে ৩০) ও শিখরের (৩৬ বলে ৫২) পোক্ত ওপেনিং স্টার্টের পর রান এগিয়েছে সাবলীলভাবেই। এরপর বিরাট (২৪ বলে ৪০), স্যামসন (১০ বলে ১৫), হার্দিক (অপরাজিত, ২২ বলে ৪২) ও শ্রেয়সের (অপরাজিত, ৫ বলে ১২) কার্যকরী ইনিংসে ভর করে দুই বল বাকি থাকতেই জিতে যায় ভারত। শেষ ওভারে দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন হার্দিক। ম্যাচের সেরাও হয়েছেন তিনি। পুরস্কার হাতে নিয়ে যদিও নটরাজনকে (৪-0-২০-২) বিশেষ কৃতিত্বে ভূষিত করেছেন। জানিয়েছেন, নটরাজনও ম্যান অফ দ্য ম্যাচের যোগ্য দাবিদার।
এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জয়, পাশাপাশি একদিনের সিরিজ হারের প্রতিশোধ। এসবের আনন্দ ও উচ্ছ্বাস ছাড়াও কোহলি বেশি খুশি, রোহিত শর্মা ও যশপ্রীত বুমরার অনুপস্থিতিতে সিরিজটি জেতায়। ম্যাচের পর ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘‘এই সিরিজ জয়টা সত্যিই বড় ব্যাপার। আমরা একটা দল হিসেবে খেলেছি। সাদা বলে আমাদের দু’জন প্রতিষ্ঠিত প্লেয়ার রোহিত আর বুমরাকে ছাড়াই আমরা জিতলাম। এটা আমাকে বেশি খুশি করেছে। গত কয়েক মাসের কথা ধরলে দেখা যাবে, আমাদের দলের প্রত্যেকে অন্তত ১৪টা করে ম্যাচ খেলেছে। ফলে এরা সবাই জানে কী করতে হবে।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘আমরা ওদের কম রানে আটকে রাখতে পেরেছিলাম। রান তাড়া করার সময় শুরু থেকেই আমাদের মনে হয়েছিল, যেহেতু ছোট মাঠ, এই রান তুলতে অসুবিধে হবে না। বোলাররা খুব ভাল বল করেছে। এই জয়ে গোটা দলের অবদান আছে। দলের তরুণ ক্রিকেটাররা সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে।’’
হার্দিকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কোহলি বলেন, ‘‘২০১৬ সালে নিজেকে প্রমাণ করে হার্দিক দলে আসে। ওর যথেষ্ট প্রতিভা ছিল। এখন ও বুঝতে পারছে, এটা ওর সময়। এই ধরনের প্লেয়ার আগামী ৪-৫ বছরে যে কোনও জায়গা থেকে ম্যাচ বের করে দিতে পারবে। এই ম্যাচে ও দুর্দান্ত পরিকল্পনা করে খেলেছে।’’
উল্লেখ্য, এই ম্যাচে কোহলিকে একটি স্কুপ মারতে দেখা যায়। অদ্ভুত মুন্সিয়ানায় তিনি শটটি খেলে অ্যান্ড্রু টাইয়ের লেন্থ বলকে ফাইন লেগের ওপর দিয়ে গ্যালারিতে পাঠিয়ে দেন। তাঁরই আরসিবি সতীর্থ এবি ডিভিলিয়ার্স এই শটটি প্রায়ই দুর্দান্তভাবে খেলে থাকেন। প্রসঙ্গ ওঠায় কোহলি বলেন, “অবশ্যই ওটা এবি শট। আজ ওকে মেসেজ করে জিজ্ঞেস করব, আমার শটটা কেমন লেগেছে।” বিরাটের এই শটটি দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘থাম্বস্ আপ’ সহ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন এবি।