এ যেন মগের মুলুক! বেশ ফলাও করেই ঘোষণা করা হয়েছিল যে করোনার টিকা সংক্রান্ত বিষয় আলোচনার জন্য বিশেষ গোষ্ঠী গড়ছে কেন্দ্র। অথচ কেন্দ্রের গড়া সেই গোষ্ঠী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেই খোদ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছেই! ওই গোষ্ঠীর বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, কত টাকা সাম্মানিক পেয়েছেন সদস্যরা, সেই বৈঠক সংক্রান্ত কোথায় রাখা হয়েছে, তা জানেই না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক! হ্যাঁ, এক আরটিআইয়ে ফাঁস হয়েছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ভেঙ্কটেশ নায়েক নামে এক মানবাধিকার কর্মী ন্যাশনাল এক্সপার্ট গ্রুপ অন ভ্যাকসিন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর কোভিড-১৯ সম্পর্কে তথ্য জানতে চেয়ে আরটিআই করেন। তাতে কমিটির সংবিধান, প্রত্যেক বৈঠকে কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল তার বিস্তারিত, সদস্যদের সামনে কী বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল, বিদেশমন্ত্রককে কোন বিষয় জানানো হয়েছিল ইত্যাদি জানতে চেয়েছিলেন নায়েক। গোষ্ঠীর চেয়ার পার্সন কিংবা সদস্যরা কত টাকা করে সাম্মানিক পেয়েছেন তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ প্রশ্নের জবাব দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক। নয়তো বলা হয়েছে বিষয়গুলি তথ্যের অধিকার আইনের বাইরে।
উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সদস্য ভিকে পালের নেতৃত্বে গড়া হয়েছে ওই বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী। করোনার টিকা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ১২ আগস্ট গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রথম বৈঠকে বসেন। কথা ছিল, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার বিষয় গাইডলাইনস দেবে এই গোষ্ঠী। গত ২১ আগস্ট বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছিলেন, বিদেশমন্ত্রক এই গোষ্ঠীকে সাহায্য করবে। যাতে দেশীয় সংস্থারা করোনা ভ্যাকসিন প্রস্ততকারক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। এ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছিলেন নায়েক।
অভিযোগ, তাঁর আরটিআইয়ের জবাব দেননি সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার। তিনি জানান, তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় নেই এই তথ্যগুলি। এই জবাবকে চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আবেদন করেন নায়েক। সেখান থেকে জবাবে জানানো হয়, সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন অফিসারের কাছে এই সংক্রান্ত তথ্য নেই। তিনি জানেনও না ওই তথ্য কোথায় রয়েছে। এরপর সেই আরটিআই বিদেশমন্ত্রক ও আইসিএমআরের কাছে পাঠানো হয়। জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে আরটিআই খারিজ করে দেয় বিদেশমন্ত্রক। আর আইসিএমআরের কাছে এ সংক্রান্ত কোনও তথ্যই নেই বলে খবর। গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মুখ পুড়েছে কেন্দ্রের।