হাতে আর মাত্র কয়েকমাস। তারপরেই একুশের ভোটযুদ্ধে নামবে দল। এই মুহূর্তে তাই চলছে সাংগঠনিক শক্তি আরও বৃদ্ধি করার কাজ। তবে এরই মধ্যে শুক্রবার তৃণমূলের দলীয় বৈঠকে তৈরি হল এক নাটকীয় এবং আবেগঘন পরিস্থিতি। দলনেত্রীর আবেগাপ্লুত বক্তব্য শুনে বৈঠকের মধ্যেই কেঁদে ফেললেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। তাঁকে শান্ত করতে হল মমতাকেই।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল নেত্রী যে অসম্ভব আবেগপ্রবণ, বিভিন্ন সময়ে তার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু মমতার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী সুব্রত (দলের অন্দরে যিনি ‘বক্সি’ বা ‘বক্সিদা’ বলেই সমধিক প্রসিদ্ধ) আবেগপ্রবণ— এমনটা তাঁর অতি বড় গুণগ্রাহীও বলবেন না। বরং দলের অন্দরে তাঁর পরিচয় সোজাসাপ্টা, নিরাবেগ এবং চাঁছাছোলা কথা বলার জন্যই। কিন্তু তাঁকে এর আগে কোনওদিন এতখানি আবেগবিহ্বল দেখেছেন বলে কেউ মনে করতে পারছেন না। ফলে বৈঠক শেষের পরেও দলের অন্দরে যত আলোচনা বক্সিদার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়া নিয়েই।
তৃণমূল সূত্রের খবর, শুক্রবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা হঠাৎই বলেন, অনেকে তাঁর মৃত্যুকামনা করছেন। কারণ, তিনি মারা গেলে তাঁরা তাঁর চেয়ারে (মুখ্যমন্ত্রীর পদে) বসতে পারবেন! নেতাদের একাংশ নেত্রীর ওই কথা শুনে বিস্মিতও হন। কিন্তু সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া হয় বক্সির। তিনি বৈঠকের মধ্যেই সর্বসমক্ষে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন। এবং কাঁদতে কাঁদতেই মমতাকে বলতে থাকেন, ‘আপনি এমন কথা বলবেন না। আপনি থাকবেন। আপনি আজীবন আমাদের নেত্রী থাকবেন। আমাদের রাস্তা দেখাবেন।’
সূত্রের খবর, বক্সিকে ওই ভাবে ভেঙে পড়তে দেখে প্রাথমিক ভাবে খানিকটা থমকে যান মমতাও। তার পরেই সামলে নিয়ে তিনি দলের রাজ্য সভাপতিকে বলেন, ‘আপনি কাঁদবেন না। আপনি একটু জল খান। শান্ত হোন।’ বক্সি তখন নিজেকে সামলে নেন। কিন্তু তার পরেও সারা বৈঠকে তাঁকে যথেষ্ট মূহ্যমান দেখিয়েছে বলেই বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের একটি বড় অংশ জানিয়েছেন।