আইএসএলের প্রথম দু’টি ম্যাচেই হার। তার উপর দলের বেশকিছু ভারতীয় ফুটবলারের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন এসসি ইস্ট বেঙ্গল রবি ফাউলার। যার জেরে শনিবারের নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড ম্যাচের আগে প্রবল চাপে ব্রিটিশ কোচটি। অবস্থা বেগতিক বুঝে দলের ভারতীয় ব্রিগেডের মানভঞ্জনের আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন ফাউলার। যাকে বলে ক্ষতে প্রলেপ! শুক্রবার অনুশীলনের পর ফাউলার বলেন, ‘মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দলের কোনও ফুটবলারকে আঘাত করাটা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। ভারতীয় কোচদের প্রতিও আমি শ্রদ্ধাশীল। আমাদের দলে বেশ কয়েকজন ভালো মানের ভারতীয় ফুটবলার রয়েছে। কিন্তু তাদের বুঝতে হবে আধুনিক ফুটবল ঠিক কী? আমার কোচিং পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে ওদের দেরি হচ্ছে। প্রথম দুই ম্যাচে পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নও সম্ভব হয়নি। এটিকে মোহন বাগানের বিরুদ্ধে আমাদের বল পজেশন ওদের থেকে বেশি ছিল। দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথমার্ধেও দাপট দেখিয়েছে ছেলেরা। বেশকিছু সুযোগও আমরা পেয়েছিলাম। এই ব্যাপারগুলি খতিয়ে না দেখে দুই ম্যাচে পাঁচ গোল হজমকেই বড় করে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া মুম্বই ম্যাচে আমরা ভাগ্যের হাতেও মার খেয়েছি। খেলার শুরুতেই ড্যানি ফক্সের মতো ডিফেন্ডারের চোট পেয়ে উঠে যাওয়া ছিল বড় ধাক্কা। ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের মনোভাব আমাকে অবাক করেছে। ওরা শুধু রেজাল্টই দেখছেন!’
ইস্টবেঙ্গলের ছ’জন বিদেশির মধ্যে চোটের জন্য এই ম্যাচে নেই অ্যারন ও ড্যানি ফক্স। অর্থাৎ নর্থ-ইস্ট পাঁচ বিদেশি খেলালেও ফাউলারের হাতে চারের বেশি নেই। এর মধ্যে আবার তিনজন মিডিও। রক্ষণে স্কট নেভিল এখনও ভরসা জোগাতে পারেননি। গত ম্যাচে ম্যাটি স্টপারের ভূমিকায় মানিয়ে নিতে ব্যর্থ। তাই হয়তো গুরতেজ সিং প্রথমবার খেলবেন। দুই সাইড ব্যাকে সামাদ ও আম্বেকরকে দেখা যেতে পারে। লেফট ব্যাকে নারায়ণ দাস একেবারেই ছন্দে নেই। গত এক সপ্তাহ প্র্যাকটিসের পর বিনীথ অনেকটাই ফিট। তাঁকে পরিবর্ত হিসেবে দেখা যেতে পারে। এছাড়া উইংয়ে গতি বাড়াতে উইজেনসন লিংডোকে খেলাতে পারেন ফাউলার।
তিনি বলেন, ‘নর্থ-ইস্ট কঠিন প্রতিপক্ষ। ইতিমধ্যে তারা সেটা প্রমাণ করেছে। তাই ওদের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ভালো শুরু করেও ম্যাচ থেকে হারিয়ে যাওয়ার বদভ্যাস কাটিয়ে ওঠা জরুরি। মূলত মনঃসংযোগের অভাবেই এমনটা হচ্ছে। একই কারণে ডার্বিতে আমাদের হারতে হয়েছে। এই ম্যাচে ছেলেদের থেকে আরও বেশি দায়বদ্ধতা আশা করছি। প্রতিপক্ষের খেলার ধরণও দ্রুত বুঝে নিতে হবে। রক্ষণে ফক্সের না থাকাটা বিশাল ক্ষতি। তবে ওর পরিবর্তে যে-ই সুযোগ পাক না কেন, তাকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।’ ফাউলারের কথা একদম সঠিক। তবে বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবল খেলতে গেলে দলে একজন যোগ্য নেতা প্রয়োজন। এই গুণটি লাল-হলুদের কোনও ফুটবলারের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে না। সমস্যা জর্জরিত লাল-হলুদ শিবিরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নর্থ-ইস্টের কোচ জেরার্ড বলেছেন, ‘ওদের খেলা দেখে হোমওয়ার্ক করেছি। ট্যাকটিক্যাল গেম হবে। আমরা জিততে আশাবাদী।’