জন্মসূত্রে ভারতীয়। খেলেন ফিজির আন্তর্জাতিক ফুটবল দলের হয়ে। সে দলের নিয়মিত সদস্য তিনি। ২০১৬-এর ব্রাজিল সামার ওলিম্পিকে ফিজির প্রথম ওলিম্পিক গোলটি এসেছিল তাঁর পা থেকে। ২০১৮ সালে পেয়েছেন কিউয়ি নাগরিকত্বও। ৩২ বছর বয়সী রয় কৃষ্ণ গতবছর সই করেন এটিকেতে। শুরুর মরসুমেই ঝলক দেখা যায় তাঁর প্রতিভার। ২১ টি ম্যাচে ১৫ বার বিপক্ষের জালে বল জড়ান। তাঁর সুচারু ফিনিশিং ক্ষমতা নজর কেড়েছিল ফুটবল বিশেষজ্ঞদের। এবার মোহনবাগানের সাথে গাঁটছড়া বাঁধার পর এটিকে নতুন রূপে ‘এটিকে মোহনবাগান’ হিসেবে আইএসেএলে তাদের অভিযান শুরু করেছে। আগের বারের মতোই দলে রয়েছেন রয় কৃষ্ণ। তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভাটা পড়েনি একটুও। এবার যেন আরও নিখুঁত হয়ে হয়ে শুরু করেছেন। তিন ম্যাচে তিন গোল করে ফেলেছেন তিনি। গোল করেছেন ডার্বিতেও।
বৃহস্পতিবার রাতে এটিকে মোহনবাগান ওড়িশা ম্যাচ জিতে আইএসএলের প্রথম দল হিসেবে শুরুতেই জয়ের ‘হ্যাটট্রিক’ করেছে। পৌঁছে গেছে লিগ টেবিলের শীর্ষে। তিনটি ম্যাচ থেকে ৯ পয়েন্ট পেয়ে তৃপ্ত এটিকে মোহনবাগানের কোচ হাবাস। তবে আত্মতুষ্ট হতে নারাজ এই স্প্যানিশ কোচ। তিনি জানান, ‘লিগের এখনও অনেক পথ বাকি। এই লম্বা অভিযানে চোট মুক্ত থাকাই বড় চ্যালেঞ্জ। গত বার চ্যাম্পিয়ন হলেও গ্রুপ লিগের শেষে শীর্ষে থাকতে পারিনি আমরা। এবার খেতাব ধরে রাখার দৌড়ে সেই আক্ষেপ ভুলতে চাই। গ্রুপ লিগে এক নম্বরে থাকলে ২০২২-২৩ মরশুমে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ পাওয়া যাবে।’
বৃহস্পতিবার বেকর্ড গড়েছেন এই মুহূর্তে মোহনবাগান জনতার আনকোরা নয়নমণি রয় কৃষ্ণ। খেলার অন্তিম লগ্নে তাঁর চমৎকার হেডারে জয়ের পালক ওঠে এটিকে মোহনবাগানের মুকুটে। পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও। সবুজ-মেরুন ভক্তকুলের নয়া হার্টথ্রব জানিয়েছেন, ‘বৃহস্পতিবার ছিল আমার ধাত্রী মায়ের জন্মদিন। এই গোলটি আমি তাঁকেই উৎসর্গ করছি। নিউজিল্যান্ডে তাঁর কাছে আমি ছোট বেলায় মানুষ হয়েছি। তাঁর সঙ্গে আমার এখনও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। প্রতিটি ম্যাচের আগে আমাকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানান তিনি। উৎসাহিত করে থাকেন।’ ওড়িশা ম্যাচ সম্বন্ধে বলতে গিয়ে তিনি আরো জানান, ‘আমাদের কাছে সব ম্যাচই ফাইনাল। দলের সকলের মধ্যেই রয়েছে নাছোড়বান্দা মনোভাব। তাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হাল ছাড়িনি। তারই ফসল সংযোজিত সময়ের ওই জয়সূচক গোল। এখনও পর্যন্ত তিনটি জয়ের মধ্যে এটাই ছিল সবথেকে আনন্দের। তবে আগামী সাত দিনে আরও দুটি কঠিন ম্যাচ রয়েছে। তাই শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা জরুরি।’
ইন্দো-ফিজিয়ান এই স্ট্রাইকারের পায়ের জাদুতে ভর করেই এটিকে মোহনবাগান আরো ম্যাচ জিতবে এবং পৌঁছে যাবে খেতাবের আরো কাছে, এই স্বপ্নেই বুক বেঁধেছেন মেরিনার্সরা।