মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অনুকরণেই কেন্দ্র সরকার আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প এনেছে বলে ফের একবার খোঁচা দিলেন যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুটি প্রকল্পের তুল্যমূল্য বিচার করে মোদীকে মমতা সরকারের থেকে সুশাসন শেখা উচিৎ বলেও কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ।
শনিবার টুইটে এই নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে একটি চার্টও শেয়ার করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বাংলায় স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। অন্যদিকে কেন্দ্র আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প এনেছে ২০১৮ সালে। ফলে মমতা সরকারের প্রকল্প দেখেই যে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের অবতারণা সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়।
এই স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের পুরো খরচ যোগাবে রাজ্য সরকার। কিন্তু আয়ুষ্মান ভারতে সেই সুবিধা নেই। সেখানে কেন্দ্র দেবে ৬০ শতাংশ টাকা। বাকি ৪০ শতাংশ টাকা দিতে হবে রাজ্যকে। এই নিয়েই আগেই আপত্তি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলন থেকেও মমতা প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন্দ্র পুরো টাকা দেবে না কেন?
গতকালই স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পকে সর্বজনীন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ ধর্ম, বর্ণ, ধনী, গরীব নির্বিশেষে সমস্ত রাজ্যবাসী এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এদিনের টুইটে সেটাকেও তুলে ধরেছেন অভিষেক।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে যাতে নারী ক্ষমতায়ন হয়, সেদিকেও নজর দিয়েছেন মমতা। তাই এর স্মার্ট কার্ড হবে বাড়ির প্রবীন মহিলার নামে। সেই কার্ডেই উপভোক্তার পরিবারের সকলে চিকিৎসা পাবেন। কিন্তু কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে এমন কোনও সামাজিক বার্তা দিতে পারছে না সেটা স্পষ্ট। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার এই স্মার্ট কার্ড দিচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। অন্যদিকে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের কার্ড পেতে হলে মাথাপিছু ৩০ টাকা করে খরচা করতে হচ্ছে। অর্থাৎ কোনও বাড়িতে ৫ জন সদস্য থাকলে গ্যাঁট থেকে খসবে ১৫০ টাকা।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে চিকিৎসার টাকা পাওয়া মিলবে তৎক্ষণাৎ। কারণ স্মার্ট কার্ড। তাছাড়া পুরো টাকাটাই দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু আয়ুষ্মানে সেই সুবিধা নেই। প্রকল্পের টাকা পেতে জুতোর শুকতলা খসাতে হতে পারে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। টুইটের শেষে এই চার্ট দিয়ে কটাক্ষ করে অভিষেক লিখেছেন, ‘বাংলা আজ যা ভাবে ভারত যে পরের দিন সেটা ভাবে তারই একটা তুলনা’।