সামাল দেওয়া যাচ্ছে না গুজরাতের করোনা পরিস্থিতি। আর তাই কার্ফু জারি হচ্ছে খোদ মোদী রাজ্যের আমেদাবাদে। যা চলবে আগামীকাল থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য তথা অমিত শাহের নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রশাসনকে এমন অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নিতে হওয়ায় তা কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে বিজেপিকে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতা রাজীব সতাভ টুইটারে একে রাজ্য সরকারের ‘ব্যর্থতা’ বলে অভিযোগ করে লিখেছেন, ‘সংক্রমণ বাড়লেও তা আটকানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। উল্টে সংখ্যা লুকোনো হয়েছে। এখন জুড়ল কার্ফুর হঠকারী সিদ্ধান্ত।’ আমেদাবাদে শুধুমাত্র ওষুধ ও দুধের দোকানকে আগামী সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত কার্ফু থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টার নৈশ কার্ফু অনির্দিষ্ট কালের জন্য বলবৎ থাকছে। স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্তও আপাতত বাতিল হয়েছে।
অন্যদিকে, ক্রমশ সঙ্কটজনক হচ্ছে দিল্লীর পরিস্থিতিও। সংক্রমণ যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে দৈনিক মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে ১৩১ জন করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে, দিল্লিতে যা রেকর্ড। অবস্থা আরও জটিল করেছে কমতে থাকা তাপমাত্রা এবং বায়ুদূষণ। প্রসঙ্গত, নভেম্বরের প্রথম থেকেই দিল্লী সংক্রমণের শীর্ষে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে ৭৪৮৬ জন সংক্রমিত হয়েছেন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়েছে। গত ১৫ দিনে দিল্লিতে এক লক্ষ মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, মাস্ক না পরলে এখন থেকে ৫০০ টাকার বদলে দু’হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
এদিকে অভিযোগ উঠছে, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় হাসপাতালে ভর্তি হতে সমস্যায় পড়ছেন অনেকেই। দিল্লীর করোনা অ্যাপের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজধানীর হাসপাতালগুলিতে ভেন্টিলেটর যুক্ত আইসিইউ বেডের ৯২ শতাংশ ভর্তি। উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর থেকে কেজরিওয়াল সরকার ৫০ জনের বদলে দিল্লীতে বিয়েবাড়িতে ২০০ জন আমন্ত্রিতকে জমায়েতের অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ বাড়়তে থাকায় পরশু থেকে ফের ৫০ জনের সংখ্যা বেঁধে দিয়েছে সরকার। এ নিয়ে দিল্লী হাইকোর্ট কেজরিওয়াল সরকারকে তুলোধোনা করে বলেছে, ‘নভেম্বরের ১ তারিখেই আপনারা বুঝেছিলেন, হাওয়া কোন দিকে বইছে। এটা আগেই করা উচিত ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছিল, তখন ঘুম ভাঙেনি কেন?’