চলতি বছর ১৪ মার্চ আইএসএল ফাইনাল শেষ হওয়ার ১ সপ্তাহ পর থেকেই করোনার থাবায় প্রায় অচল হয়ে যায় ভারত-সহ গোটা বিশ্ব। থমকে গিয়েছিল ক্রীড়াবিশ্বও। তবে করোনায় লাগাম টেনে বিদেশের মাঠে ফুটবল আগে গড়ালেও এ দেশের মাঠে তা শুরু হয়েছে দেরিতে। এদিকে, আজ থেকে শুরু হচ্ছে এ বারের আইএসএল। তার আগে অবশ্য হয়ে গিয়েছে দ্বিতীয় ডিভিশন আই লিগ। কিন্তু গোটা দেশের ফুটবলভক্তদের নজরে রয়েছে এ বারের আইএসএল। এটিকে-মোহনবাগান বনাম কেরল ব্লাস্টার্স ম্যাচের পারদ চড়তে শুরু করে দিয়েছে। কেমন হবে প্রথম দিনের ম্যাচ? দুই স্পেনীয় কোচের মগজাস্ত্রের লড়াই দেখে কি মন ভরবে ফুটবলভক্তদের?
জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলকিপার সন্দীপ নন্দী বলছেন, “যে কোনও টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ কঠিনই হয়। কোনও দলই শুরু থেকে আক্রমণে যেতে চায় না। আন্তোনিয়ো লোপেজ হাবাস অভিজ্ঞ কোচ। তিনিও শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তা নেবেন না। বরং নিজের ডিফেন্স জমাট করে পরে আক্রমণে যাবেন। অন্য দিকে কিবু ভিকুনার খেলার স্টাইল অন্যরকমের হলেও প্রথম ম্যাচ বলে একটু গুটিয়েই থাকবেন বলে মনে হয়।”
শুক্রবারের উদ্বোধনী ম্যাচের আগে সে ভাবে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি এটিকে-মোহনবাগানের। হাবাসও সেই কথা বলছিলেন। কেরল ব্লাস্টার্সও দীর্ঘ প্রি সিজন করতে পারেনি। তার উপরে বেশ কয়েক জন ফুটবলার কোয়ারেন্টাইন পর্ব কাটিয়ে উঠেছেন ৩ দিন আগে। এ রকম পরিস্থিতিতে ফুটবলারদের ফিটনেস লেভেল কেমন, তার উপরে নির্ভর করে রয়েছে আগামীকালের ম্যাচ। কেরল ব্লাস্টার্সের জার্সিতে অতীতে খেলেছেন মেহতাব হোসেন। ইস্ট-মোহনের মাঝমাঠ সামলানো মিডফিল্ডার বলছেন, “অতিমারি পরিস্থিতির জন্য অনুশীলন দেরিতে শুরু হয়েছে। ফুটবলাররা কতটা নিজেদের ফিট রাখতে পেরেছে, তার উপরেও নির্ভর করছে ম্যাচের ভাগ্য।”
এদিকে, করোনা অতিমারির কারণে দেশে প্রথম বার দর্শকহীন স্টেডিয়ামে গোটা টুর্নামেন্ট হচ্ছে। দর্শক না থাকলে ফুটবলাররা নিজেদের উজ্জীবিত করতে পারবে না বলেই মত সন্দীপ নন্দীর। তিনি বলছেন, “দর্শক অনেকটা রান্নায় নুনের মতো, না পড়লে কোনও স্বাদই নেই। দর্শকের উপস্থিতি প্লেয়ারদের মোটিভেট করে, এনার্জি বাড়ায়, আবেগ তাড়িত করে। একটা-দুটো ম্যাচ তবুও খেলা সম্ভব কিন্তু গোটা টুর্নামেন্ট দর্শকহীন হলে সমস্যায় পড়বে ফুটবলাররাই।”
এখন অবশ্য পেশাদারদেরই যুগ। যত দ্রুত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন ফুটবলাররা, ততই নিজেদের ছন্দ ফিরে পাবেন তাঁরা। সন্দীপ-মেহতাব যদিও সেটা মানছেন। কিন্তু যোগ করছেন, “প্রথম ম্যাচে ফুটবলারদের খেলায় জড়তা দেখা দেবে। তার কারণ হল, অনেক দিন পরে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে নামছে তাঁরা। ম্যাচ ফিট হতে বেশ কয়েকটা ম্যাচ দরকার। চোট লাগার আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে।” তবে সমস্ত বাধা পার করে দেশের মাটিতেই যে কোটি টাকার ফুটবল লিগ আয়োজন করা যাচ্ছে, এতেই খুশি সকলে।