উৎসব কাটতেই ফের বাংলা জুড়ে দলীয় প্রচারের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধী দল মাঠে-ময়দানে সেভাবে নামার আগেই তিনি এক টানা জনসংযোগ কর্মসূচির মাধ্যমে দলকে একেবারে তৃণমূল স্তরে মানুষের কাছে পাঠাতে চাইছেন এই লক্ষ্যে। এজন্য ‘বঙ্গধ্বনি’ নাম দিয়ে এক বিরাট কর্মসূচির পরিকল্পনাও করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৯ তারিখ রাসযাত্রার দিন কলকাতা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জনসংযোগ কর্মসূচির সূচনা করবেন মমতা। সেই মতো সাংগঠনিক প্রস্তুতি এখন জোর কদমে চলছে। ‘দিদিকে বলো’ এবং ‘বাংলার গর্ব মমতা’-র মতো ‘বঙ্গধ্বনি’ কর্মসূচিকেও পুরোপুরি পেশাদারি ঢঙে সফল করে তুলতে আসরে নেমেছে তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাক। সংস্থার অন্যতম কর্ণধার প্রশান্ত কিশোর নিজে তার তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
ভোটের মাস কয়েক আগে এই বঙ্গধ্বনি কর্মসূচির উদ্দেশ্য ঠিক কী? কারা, কীভাবে তার সফল রূপায়ণ সম্ভব করে তুলবে? এসব বিষয় নিয়ে এখন চূড়ান্ত পরিকল্পনা চলছে পিকের টিমের সঙ্গে তৃণমূলের নেতৃত্বের।
তবে মমতা চান, কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে গোটা দল একেবার তৃণমূল স্তরে নেমে গিয়ে ভোটারদের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাক। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলুক দলের ব্লক এবং স্থানীয় নেতারা। বিধায়কদেরও বেশি করে এই জনসংযোগ কর্মসূচির অংশীদার হওয়ার নিদান দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী-এমপি’রাও সময়-সুযোগ করে তাতে অংশ নেবেন। বাড়ি বাড়ি যাওয়ার পাশাপাশি পাড়া বৈঠকে বসে স্থানীয় নেতৃত্ব জনস্বার্থে রাজ্য সরকারের গৃহীত বিবিধ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের তুলে ধরুক। একইভাবে সরকার ও দলের কাছে মানুষের আরও কী প্রত্যাশা রয়েছে, তারও হিসেব বুঝে নিক তারা। বাংলার মানুষের মনের কথা শোনার জন্যই কর্মসূচির নাম ‘বঙ্গধ্বনি’ রাখার কথা ভেবেছেন জোড়াফুল নেত্রী।
দলীয় সূত্রের খবর, নিচুতলা থেকে এই কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের যে অভাব-অভিযোগের তথ্য উঠে আসবে তা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হয়েছে। সেক্ষেত্রে দলের পাশাপাশি প্রশাসনিক স্তরেও কিছু সিদ্ধান্ত তখন নেওয়া হবে। গোড়ায় জনসংযোগের জন্য ভোটের আগে কোনও টানা পরিক্রমা বা ‘যাত্রা’ গোছের কর্মসূচি গ্রহণের কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু কোভিডের কারণে তা বাতিল করা হয়। তবে ভোট ঘোষণার আগেই দলের এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিরোধীদের থেকে নির্বাচনী প্রচারে তৃণমূল অনেকটা এগিয়ে থাকবে বলে নেতৃত্বের দৃঢ় বিশ্বাস।