বিজেপি শাসিত আসামে ফের সাংবাদিক নিগ্রহের অভিযোগ। তাও আবার প্রকাশ্য দিবালোকে। বহু মানুষের সামনে। অথচ, ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারল না। আক্রান্তের পরিবারের আশঙ্কা, প্রশাসন যদি দ্রুত পদক্ষেপ না করে, তাহলে আবারও আক্রমণ হতে পারে মিলন মোহন্ত নামের ওই সাংবাদিকের উপর।
মিলন মোহন্ত আসামের প্রথম সারির দৈনিক ‘অসমিয়া প্রতিদিনে’র সাংবাদিক। প্রায় দু’দশক ওই সংবাদপত্রটির সঙ্গে যুক্ত তিনি। গুয়াহাটি এবং সংলগ্ন এলাকায় যে কোনও অপরাধমূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছার হয় তাঁর কলম। এ হেন সাংবাদিককে রবিবার প্রকাশ্যে গুয়াহাটি থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে মির্জা এলাকায় একটি ইলেক্ট্রিকের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে কিছু দুষ্কৃতী। আশেপাশের কেউ কেউ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও আক্রমণ করা হয়। গুরুতর যখন হন মিলন। আপাতত তিনি বিশ্রামে।
মিলন বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় ওরা আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমি ওদের বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ ফাঁস করে দিয়েছিলাম। সেদিন যারা আমাকে বাঁচাতে আসছিল তাদেরও আক্রমণ করেছে। আশ্চর্যের বিষয় হল, ঘটনার পর তিনদিন হয়ে গেলেও পুলিশ আমার বাড়িতে একবার খোঁজ পর্যন্ত নিতে এল না।’ মিলনের উপর এই আক্রমণের প্রতিবাদ যে হয়নি, তা নয়। মিরজার স্থানীয় সাংবাদিকরা রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ করেছেন। নিরেন মালি নামের স্থানীয় এক সাংবাদিক বলছেন, একজন সাংবাদিককে প্রকাশ্যে এভাবে মারধর করা হল। অথচ, পুলিশ এখনও কোনও ব্যবস্থা নিতে পারল না? আমাদের সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য কঠোর আইন প্রয়োজন।
এদিকে এসবের মধ্যে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে মিলনের পরিবারের। তাঁদের ধারণা, ওই সাংবাদিকের উপর ফের আক্রমণ হতে পারে। মিলনের স্ত্রী বলছিলেন, ‘ও খুব সৎ সাংবাদিক। কখনও খবরের জন্য ঘুষ নেয়নি। আমরা ওঁর কাজের প্রতি নিষ্ঠাকে সম্মান করি।’ পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সেটা বুঝতে পারছে না মিলনের পরিবারও। স্থনীয় পুলিশ প্রশাসনের দাবি, ওই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক। প্রত্যেকের মোবাইলও বন্ধ, তাই লোকেশন ট্রেস করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে, তাদের সন্ধান চলছে।