দীপাবলিতে আলো আর আতসবাজিতে মেতে ওঠে গোটা দেশ। এ বছর করোনার জন্য পরিস্থিতি কিছুটা প্রতিকূল হলেও আলোর উৎসবে সামিল হওয়ার তোড়জোড় চলছে কমবেশি সর্বত্রই। তবে এই আবহেই ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল নিয়ন্ত্রণরেখা। ভারতীয় সেনার দাবি, বিনা প্ররোচনায় আজ জম্মুর পুঞ্চ এবং উত্তর কাশ্মীরের গুরেজ থেকে উরি পর্যন্ত এলাকায় হামলা চালায় পাকিস্তানি সেনা। তাতে চার সেনা ও এক বিএসএফ সাব ইনস্পেক্টর-সহ ১১ জন নিহত হয়েছেন। বাকি ৬ জন গ্রামবাসী।
নিহত সেনাদের মধ্যে সুবোধ ঘোষ বাংলার বাসিন্দা। নিহত আর এক সেনার নাম হরধনচন্দ্র রায়। তবে তিনি কোন রাজ্যের বাসিন্দা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বাকি দুই সেনার পরিচয় এখনও প্রকাশ করেনি সেনা। গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন জওয়ান ও স্থানীয় বাসিন্দা। ভারতীয় সেনার দাবি, পাল্টা হামলায় ৮ জন পাক সেনা নিহত হয়েছেন। প্রভূত ক্ষতি হয়েছে পাক সেনাবাহিনীর। রাখচিকরি ও তারি বান্দ সেক্টরে সেই হামলায় এক পাক সেনা ও চার জন গ্রামবাসীও নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ জন গ্রামবাসী।
কাশ্মীরে তুষারপাতের আগে কাশ্মীরে জঙ্গী অনুপ্রবেশ ঘটাতে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানের তৎপরতা অনেকটাই বেড়েছে। এ দিনের ঘটনাও তারই অংশ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা, কুপওয়ারা জেলায় বারবার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে পাকিস্তান। সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, বারামুলার নাম্বলা সেক্টরে মর্টার ছোড়ে পাক সেনা। হামলায় দু’জন ভারতীয় জওয়ান নিহত হন। হাজি পীর সেক্টরে নিহত হয়েছেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর ৩৯ বছর বয়সি সাব-ইনস্পেক্টর রাকেশ ডোভাল।
বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে, দুপুর ১টা ১৫ মিনিট নাগাদ যখন পাক সেনা হামলা শুরু করে, তখনই রাকেশ আহত হন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। শ্রীনগরে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রাজেশ কালিয়া বলেন, ‘তিন জন সেনা জওয়ান নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই পাক সেনা নিরীহ গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে।’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, কামালকোট সেক্টরের চুরান্দা, সিলিকোট, গরকোট, হাতলাঙ্গা, নাম্বলা ও রুস্তম মহল্লায় গোলাবর্ষণ শুরু করে পাক বাহিনী।
ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানকেও উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সেনার পাল্টা হামলায় ৮ জন পাক সেনা নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে ২ জন স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের কমান্ডো। ১০-১২ জন পাক সেনা আহত। রাজেশ কালিয়া বলেন, ‘পাক সেনার প্রচুর বাঙ্কার, অস্ত্রশস্ত্র, জ্বালানি ঘাঁটি ও লঞ্চপ্যাড ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।’ ভারতীয় সেনার প্রকাশ করা ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেটে ধ্বংস হচ্ছে পাক বাঙ্কার।